Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাজ্যে অঙ্গদান বাড়াতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ডাক

সমস্যার অন্ত নেই। আইনি জটিলতা আছে, আইন ভাঙা এবং আইনের অপব্যবহার রয়েছে, প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপের অপচেষ্টা রয়েছে। রয়েছে সচেতনতার অভাবও। অভিযোগ, ভিতরে-ভিতরে অনেক ক্ষেত্রে রয়েছে টাকার খেলাও। এত কিছুর মধ্যেও অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপনে উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ কিছুটা এগিয়েছে বলে দাবি করলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৫ ০৩:৩১
Share: Save:

সমস্যার অন্ত নেই। আইনি জটিলতা আছে, আইন ভাঙা এবং আইনের অপব্যবহার রয়েছে, প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপের অপচেষ্টা রয়েছে। রয়েছে সচেতনতার অভাবও। অভিযোগ, ভিতরে-ভিতরে অনেক ক্ষেত্রে রয়েছে টাকার খেলাও। এত কিছুর মধ্যেও অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপনে উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ কিছুটা এগিয়েছে বলে দাবি করলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে। তবে দক্ষিণ ও পশ্চিমের অনেক রাজ্যের থেকে পিছিয়ে এ রাজ্য।

মলয়বাবু বলেন, মরণোত্তর অঙ্গদানে এখনও রাজ্যের মানুষকে যথেষ্ট সচেতন করা যায়নি। আর তাই এ ক্ষেত্রে কিছু রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকে বেশ পিছনে ফেলে দিয়েছে। স্বাস্থ্যসচিবের মতে, শুধু সরকারি প্রচেষ্টায় হবে না, এর জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে এবং মস্তিষ্কের মৃত্যু হওয়া রোগীর পরিবারকে কাউন্সেলিং করে সময়মতো মৃতদেহ থেকে অঙ্গদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

শনিবার সন্ধ্যায় বেঙ্গল ক্লাবে অঙ্গদান ও প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল সদ্য প্রতিষ্ঠিত ‘টিজি লাইফ ফাউন্ডেশন’। প্রয়াত তুতুল গুপ্ত স্মরণে ট্রাস্ট পরিচালিত এই ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছেন তাঁর স্বামী বিশ্বজিৎ গুপ্ত, ছেলে অভিষেক ও মেয়ে নন্দিনী। এক বছর আগে ‘সিরোসিস অফ লিভার’-এ মারা যান তুতুল। অনেক চেষ্টার পর যখন তাঁর জন্য লিভার-দাতা মেলে, তার পরেই মৃত্যু হয় তুতুলের। দেরি হওয়ায় অস্ত্রোপচারের সুযোগই মেলেনি। তাঁর স্মৃতিতে তৈরি ফাউন্ডেশন অঙ্গদান সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করবে বলে জানান তাঁর পরিবার।

এই আলোচনা সভাতেই অন্যতম বক্তা ছিলেন মলয় দে। তিনি জানান, এ রাজ্যে প্রচুর কিডনি প্রতিস্থাপন হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গ্রহীতাদের আত্মীয়েরাও যেমন দাতা হচ্ছেন, তেমনই দাতা হচ্ছেন অনেক অনাত্মীয়ও। ভিন রাজ্যের অনেক দাতা ও গ্রহীতা
এ রাজ্যে এসে প্রতিস্থাপন করাচ্ছেন। মলয়বাবুর কথায়, ‘‘অনেকে যেমন প্রতিস্থাপনে উপকৃত হচ্ছেন,
অনেকে আবার তার অন্যায় ফায়দা লুটতে চাইছেন। একমাত্র মস্তিষ্কের মৃত্যু হওয়া রোগী ও মৃতদেহ থেকে অঙ্গ নিয়ে প্রতিস্থাপনই হল স্বচ্ছ প্রক্রিয়া।’’ সরকারকেও অনেক কিছু করতে হবে তা স্বীকার করে স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘‘দান করা অঙ্গগুলি সরকারের কাছে কেন্দ্রীয় ভাবে গচ্ছিত রাখার পরিকাঠামো দরকার। সঠিক সংরক্ষণ-ব্যবস্থাও করতে হবে এবং রাজ্যের কোথায় কত মানুষ অঙ্গের জন্য অপেক্ষা করছেন, তার তালিকা তৈরি করতে হবে।’’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ভারতে এখন অন্তত ২৫ লক্ষ মানুষ কোনও না কোনও অঙ্গের জন্য দাতার অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু ভারতে প্রতি দশ লাখে মাত্র ০.০০১ শতাংশ মানুষ অঙ্গদান
করেন। অথচ, ‘ব্রেন ডেথ’ বা মস্তিষ্কের মৃত্যু হওয়া এক জনের দেহ থেকে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে অন্তত ৮ জন মানুষ প্রাণে বাঁচতে পারেন। সরকার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ— সর্ব স্তরে সচেতনতা ও উদ্যমের অভাব এর জন্য দায়ী বলে এ দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিকিৎসকেরা অভিযোগ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Campaign death organ Biswajit Gupta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE