—ফাইল চিত্র।
প্রচুর আলু উৎপাদন হচ্ছে। চাষিরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এই প্রেক্ষিতে আলুচাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজ্য সরকার কোনও হিমঘর-মালিককে চাষির কাছ থেকে আলু কিনতে বাধ্য করাতে পারে কি? একটি হিমঘরের এক ডিরেক্টরের দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তোলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক।
মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকার ওই হিমঘর-মালিকের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তন্ময় চৌধুরী জানান, ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কুইন্টাল-প্রতি ৫৫০ টাকা দরে জ্যোতি আলু কিনতে হবে হিমঘর-মালিকদের। সেই আলু হতে হবে ৫৫ মিলিমিটার থেকে ১০০ মিলিমিটার ব্যাসার্ধের। আলু নিয়ে চাষিদের টাকা মিটিয়ে দিতে হবে চেকের মাধ্যমে। আলু কেনার জন্য হিমঘর-মালিকেরা সংশ্লিষ্ট জেলার সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাবেন। ঋণ মেটাবেন হিমঘর-কর্তৃপক্ষকেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা রয়েছে, হিমঘরের সংরক্ষণ-ক্ষমতার ২০% জায়গায় চাষিদের কাছ থেকে কেনা আলু রাখতে হবে। কোনও হিমঘর নির্দিষ্ট পরিমাণ আলু না-কিনলে তার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে।
আইনজীবীরা জানান, ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে বড়ঞার বিডিও ৩ মার্চ সংশ্লিষ্ট হিমঘর-কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানান, আলু কেনার জন্য বিডিও অফিসে ৪ মার্চ বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে থাকবেন বড়ঞার ওসি, অন্যান্য হিমঘরের কর্তৃপক্ষ, জেলা কৃষি বিপণন দফতরের কর্তা, জেলা পরিষদের প্রতিনিধি-সহ প্রশাসনের আধিকারিক এবং বিডিও নিজে।
চিঠি পেয়ে ৫ মার্চ হাইকোর্টে মামলা করেন বড়ঞার ওই হিমঘরের অন্যতম ডিরেক্টর অমিত রায়। এ দিন সেই মামলার শুনানিতে বিকাশবাবুরা জানান, তাঁদের মক্কেল হিমঘর ভাড়া দেন। আলু কিনে সেখানে রেখে পরে তা চড়া দামে বাজারে ছাড়েন না। তা ছাড়া কৃষি বিপণন দফতরের ওই বিজ্ঞপ্তি অসাংবিধানিক। কোনও ব্যবসায়ীকে এই ভাবে আলু কেনার জন্য বাধ্য করানো যায় না।
রাজ্যের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদার আদালতে জানান, হিমঘর-মালিকেরা আলুর ব্যবসা করেন। চাষিদের স্বার্থেই ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
বিকাশবাবুরা আদালতে জানান, রাজ্য সরকার তাদের নিজস্ব সংস্থার মাধ্যমে চাষিদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সংগ্রহ-মূল্য দিয়ে ধান কেনে। গত বছরেও কিনেছে। সেই ধান কেনার জন্য চালকল-মালিকদের বাধ্য করানো হয়নি। আলুর ক্ষেত্রে হিমঘর-মালিকদের বাধ্য করানো হবে কেন, প্রশ্ন তোলেন ওই আইনজীবীরা।
বিচারপতি বসাক তা শুনে অভ্রতোষবাবুর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘বার কাউন্সিল কি কোনও আইনজীবীকে এমন নির্দেশ দিতে পারে যে, বছরে যত মামলা লড়েন, তার ২০ শতাংশ জনস্বার্থে বিনা পারিশ্রমিকে করে দিতে হবে? এ ভাবে কি কাউকে বাধ্য করানো যায়?’’ অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, তিনি রাজ্য সরকারের বক্তব্য ১২ মার্চ আদালতে জানাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy