Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ক্যানসার যুদ্ধে জিতে শিশু রোগীর পাশে

স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় জেলায় প্রথম হবেন। হঠাৎ সব বদলে গেল। বছর সতেরোর মেয়েটার যন্ত্রণা শুরু হল পায়ে। তার পরে সারা গায়ে কালো দাগ। মুখ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হল। রক্তপরীক্ষায় জানা গেল, বারাসতের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার তিথি আইচ ক্যানসারে আক্রান্ত। মারণ ব্যাধির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই শুরু হয় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৫
Share: Save:

স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় জেলায় প্রথম হবেন। হঠাৎ সব বদলে গেল। বছর সতেরোর মেয়েটার যন্ত্রণা শুরু হল পায়ে। তার পরে সারা গায়ে কালো দাগ। মুখ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হল। রক্তপরীক্ষায় জানা গেল, বারাসতের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার তিথি আইচ ক্যানসারে আক্রান্ত। মারণ ব্যাধির বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই শুরু হয় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে।

তিথি এখন বছর বাইশের তরুণী। কালব্যাধিকে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিথি এখন ক্যানসারে আক্রান্ত শিশু এবং তাদের পরিবারের লড়াইয়ের সঙ্গী। হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে নিজের লড়াই ও জয়ী হয়ে ওঠার গল্প শোনান আক্রান্ত শিশুদের। তাদের বাবা-মায়েদের প্রয়োজনমতো তথ্য সরাবরাহ করে সাহায্যও করেন।

শুক্রবার টাটা ক্যানসার সেন্টারে ক্যানসার-জয়ী শিশু এবং তাদের পরিবারকে নিয়ে এক অনুষ্ঠানে ছিলেন তিথি। তিনি জানান, ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পরে নীলরতন সরকার হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের ছোট্ট কেবিন পাঁচ মাস তাঁর ঘরবাড়ি হয়ে উঠেছিল।

‘‘সারা দিন কেবিনের ছোট্ট জানলার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। বিছানার পাশে বসে কাঁদতেন মা। কারও ক্যানসার হয়েছে, এটা জানার পরে পরিবারের কী মানসিক অবস্থা হয়, সেটা জানি। তবে ক্যানসার হলেও জেতা যায়। সেটা বোঝানোর জন্যই হাসপাতালে যাই,’’ বললেন তিথি।

ক্যানসার শুধু রোগীকে নয়, তাঁর পরিবারকেও মানসিক ভাবে দুমড়েমুচড়ে দেয়। সেই সঙ্গে ওই রোগের চিকিৎসা চালাতে গিয়েও আর্থিক সঙ্কটেরও মুখোমুখি হতে হয় অনেক পরিবারকে। যেমন হয়েছিল তিথির বাবার ক্ষেত্রে। সোনারপুরের চামড়ার কারখানায় কাজ করতেন তিনি। কিন্তু পাঁচ মাস মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। ফলে কারখানার কাজটা চলে যায়। তখন তিথির চিকিৎসা বাবদ মাসে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা লাগত। চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছিল তাঁর পরিবার। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প বলার পাশাপাশি কোথা থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যেতে পারে, তার সুলুকসন্ধানও দেন তিথি।

এ দিনের অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ও শিশু ক্যানসার চিকিৎসক অর্পিতা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রোগ সম্পর্কে অযথা আতঙ্কিত না-হয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।’’ টাটা ক্যানসার সেন্টারের অধিকর্তা, ক্যানসার চিকিৎসক মামেন চান্ডি বলেন, ‘‘ক্যানসারের মতো রোগের চিকিৎসায় উন্নত প্রযুক্তি, উন্নত পরিকাঠামো তো চাই-ই। সেই সঙ্গে রোগী ও চিকিৎসকের পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়নও জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cancer Survivor Cancer Patient Cancer Awareness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE