নিজের গাড়ির সামনে ইউনুস। এই গাড়িই দুর্ঘটনায় পড়েছিল। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ সুপার থাকাকালীন একাধিকবার হুমকি দেওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে। ভারতীর একচ্ছত্র আধিপত্যের কথা জানতেন তিনিও। তারপরেও তিনি ভারতীর বিরুদ্ধে টাকা হাতানোর মামলা করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। সে বারের মতো মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন বটে। তবে এ বার শেষ দেখে ছাড়তে চান ইউনুস আলি মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘উনি অনেককে কাঁদিয়েছেন। এ বার নিজে কাঁদুন। আমি শেষ দেখে ছাড়ব।”
বছর দেড়েক আগে, ২০১৬ সালের শেষ দিকে হাইকোর্টে ভারতী ও তাঁর অধীনস্থ তিন পুলিশ আধিকারিক-কর্মীর নামে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ইউনুস। তাঁর দাবি, ভারতী ৪৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইউনুস বলছিলেন, “ওই সময়টা কঠিন ছিল। কত যে মানসিক চাপ সহ্য করেছি বলে বোঝাতে পারব না। তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী। শুনেছিলাম, ওঁর নামে না কি বাঘে গরুতে একঘাটে জল খায়। বারবার বলা সত্ত্বেও টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। আমি অবশ্য তখনই ঠিক করেছিলাম, যা হওয়ার হবে। অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াবো না।” তাঁর দাবি, “যে দিন মামলা করলাম, পরের দিন থেকেই আমার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণ শুরু করে দিয়েছিলেন। আমার পরিচিতদের ধমকানো শুরু হল। ভয় দেখানো শুরু হল।”
একই সঙ্গে ইউনুসের দাবি, “সেই সময় পরিচিতদের অনেকে পুলিশের হুমকির মুখে পড়ে আমার বাড়িতে গিয়েছেন। কত কেঁদেছেন। মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলেছেন। একবার আমাকে ধরতে না কি পুলিশও পাঠানো হয়েছিল।”
গত বুধবারই মেদিনীপুর আদালতে ভারতী-সহ ওই চারজন পুলিশ আধিকারিক-কর্মীর বিরুদ্ধে টাকা হাতানোর অভিযোগেই মামলা করেছেন ইউনুস। উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের ফল ব্যবসায়ী ইউনুসের দাবি, ২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর দাদা সামিদের মাধ্যমে গাড়িতে ঝাড়গ্রামের কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে তিনি ৪৫ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছিলেন। রাতে খড়্গপুরে দুর্ঘটনা ঘটলে সামিদ ও গাড়ির চালক জখম হন। ঘটনার কথা জানতে পেরে ইউনুস খড়্গপুরের এক পরিচিত যুবক সাফিককে ফোন করে তাঁদের উদ্ধারের জন্য বলেন। যদিও সাফিক যাওয়ার আগেই টহলরত এসআই চিরঞ্জিৎ ঘোষ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর থেকে একাধিকবার ঘুরেও তিনি টাকা ফেরত পাননি বলে অভিযোগ।
ইউনুসের দাবি, “অনেক বলাবলির পরে ২০ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছিল। তখন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে মামলা প্রত্যাহার করলে বাকি ২৫ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অনেক চাপ ছিল। বাধ্য হয়েই মামলা প্রত্যাহার করেছিলাম। মামলা প্রত্যাহারের পরে ২৫ লক্ষ টাকা তো দেওয়াই হয়নি, উল্টে ওই ২০ লক্ষ টাকাও নিয়ে নেওয়া হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy