সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
লোকসভা ভোটের আগে ফের সিবিআই, ইডিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে বলে প্রকাশ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার ২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চে বিজেপি সরকারকে উৎখাতের ডাক দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাকে আরও বেশি করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগানো হতে পারে বলে মমতার মন্তব্য।
তবে বিজেপির বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হওয়ায় সিবিআই লাগিয়েও তৃণমূলের কোনও ক্ষতি করা যাবে না বলে মনে করেন তৃণমূল নেত্রী। একই সুরে বিজেপিকে সিবিআই-ইডি নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
শনিবার ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে মমতা বলেন, ‘‘এই যে আমি বিজেপি হঠানোর কথা বলছি, এর জন্য সিবিআই, ইডি পাঠাতে পারে। কিন্তু তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’’ তাঁর আগে অভিষেকও বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘সিবিআই, ইডি দেখিয়ে, ধমকিয়ে চমকিয়ে তৃণমূলকে ভয় দেখাবে ভেবেছে। সিবিআই, ইডি দেখিয়ে তৃণমূলের কাঁচকলা করেছে। আগামী দিনে সিবিআই, ইডি কাঁচকলা করবে।’’
২০১৪ সালে বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকে সারদা তদন্ত বা নারদ-কাণ্ডে তৃণমূলের একের পর এক নেতা-মন্ত্রীকে সিবিআই, ইডি বারবার জেরা করেছে। তৃণমূলের বেশ কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস পাল, প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র দীর্ঘদিন জেলবন্দি ছিলেন। প্রত্যেকেই এখন জামিনে মুক্ত।
সিবিআই-তদন্ত যে এখন বেশ ঢিমেতালে চলছে, তার জন্য দিন কয়েক আগেই সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসিত হয়েছে সিবিআই। তৃণমূল-বিজেপির ‘বোঝাপড়া’র কারণেই সিবিআইয়ের সক্রিয়তা কম বলে বারবারই বিরোধীরা অভিযোগ তুলছে। এই পরিস্থিতিতে এ বার তিনি বিজেপি নিকেশের ডাক দেওয়ায় আবার লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে তৃণমূলের ‘চাপ’ বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারে বলে মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা।
লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপবাবুকে সিবিআই যে জেলবন্দি করে রেখেছিল, সে ঘটনার উল্লেখ করেছেন মমতা। সিবিআই হেফাজতে থাকার স্মৃতি টেনে সুদীপবাবু বলেন, ‘‘অন্য অনেককে ভয় দেখানো যায়, মাথা নুইয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু আমরা যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত, আমাদের কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে ভয় দেখিয়ে, চোখ রাঙিয়ে থামানো যায় না।’’
রাজনৈতিক ‘চাপ’ বাড়াতে বিজেপি সিবিআইকে হাতিয়ার করলেও তৃণমূল দমবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। রাজ্যের শাসক হওয়া সত্ত্বেও বিরোধীদের বিরুদ্ধে তিনি কোনও রকম আইনি ‘ভয়’ বা মামলা করছেন না বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার হাতেও তো অনেক কেস আছে। কিন্তু আমরা তো কিছু করিনি।’’
যার জবাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের মন্তব্য, ‘‘সিবিআই, ইডির তদন্ত আদালতের নির্দেশে চলছে। সারদা তদন্ত শুরু হয়েছিল কংগ্রেস জমানায়। বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করাচ্ছেন। পুলিশকে ব্যবহার করছেন। ওঁর মুখে এ সব কথা মানায় না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy