Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Town Hall

টাউন হলে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রি নিয়ে তথ্য তলব করল সিবিআই

২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কলকাতার টাউন হলের ‘বেসমেন্ট’-এ মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রির জন্য এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। টাউন হলের মালিক  পুরসভা। যখন ওই প্রদর্শনী হয়, তখন পুরসভায় তৃণমূলই ক্ষমতায় ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:০৪
Share: Save:

সারদা ও রোজ ভ্যালি কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির প্রদর্শনী নিয়ে কলকাতা পুরসভার কাছে তথ্য তলব করল সিবিআই।

তিন দিন আগে পুর কমিশনারকে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠায় সিবিআই। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরসভার এক প্রতিনিধি সল্টলেকে সিবিআইয়ের দফতরে কিছু তথ্য জমা দিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন টাউন হলের এক আধিকারিক। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘চিঠি তো আমাকে পাঠায়নি। আমি কিছু বলতে পারব না।’’ পুর কমিশনার খলিল আহমেদ ফোন ধরেননি, মোবাইলে পাঠানো বার্তার জবাবও দেননি।

২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কলকাতার টাউন হলের ‘বেসমেন্ট’-এ মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রির জন্য এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। টাউন হলের মালিক পুরসভা। যখন ওই প্রদর্শনী হয়, তখন পুরসভায় তৃণমূলই ক্ষমতায় ছিল।

টাউন হল ভাড়া চেয়ে মুকুল রায়ের সই করা তৃণমূলের সেই চিঠি।

সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, ওই প্রদর্শনীতে বেশ চড়া দামে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রি হয়েছিল। ছবি যাঁরা কিনেছিলেন তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু ব্যবসায়ী-শিল্পপতি ছাড়াও সারদা ও রোজ ভ্যালি কর্তারা ছিলেন। কেন তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি অত দামে দিয়ে কিনেছিলেন, এ ব্যাপারে তাঁদের উপরে কোনও চাপ ছিল কি না, এবং সেই ছবি নিয়ে তাঁরা কী করেছেন— এ সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।

সম্প্রতি ওই ছবি বিক্রির বিষয়ে ব্যবসায়ী শিবাজী পাঁজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, টাউন হলের প্রদর্শনীর তত্ত্বাবধানে ছিলেন শিবাজী। এর আগে ২০১১ সালে শেক্সপিয়র সরণীর একটি বেসরকারি স্টুডিয়োতেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবির প্রদর্শনী হয়েছিল। সেখান থেকেও বিক্রি হয়েছিল বেশ কিছু ছবি। সেই প্রদর্শনীর দায়িত্বে ছিলেন তৃণমূলের এক প্রাক্তন সাংসদ। ওই প্রদর্শনীর বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। স্টুডিয়োটি অবশ্য এখন বন্ধ।

মুখ্যমন্ত্রীর ছবির প্রদর্শনীর সূত্রে বারবারই উঠে আসছে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অধুনা বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম। পুরসভা সূত্রে বলা হচ্ছে, টাউন হল ভাড়া চেয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল, তাতে মুকুল রায়ের সই ছিল। হলের ভাড়া মেটানোর নথিতেও মুকুলেরই নাম রয়েছে। সিবিআই সূত্রের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অনেকেই জানিয়েছেন যে, ছবি বিক্রির যাবতীয় টাকা মুকুলের কাছেই জমা পড়েছিল। মুকুল অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘আমি সেই সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম বলে এই ধরনের হল ভাড়া থেকে শুরু করে যাবতীয় চিঠিতে আমার সই থাকত। তবে, ছবি বিক্রির টাকা যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখা হত, তার দায়িত্বে ছিল একটি কোর কমিটি। আমি সেই কমিটির সদস্য ছিলাম না।’’

সিবিআই কর্তাদের বক্তব্য, সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এবং রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডু জেরার মুখে স্বীকার করেছেন যে ওই দু’টি প্রদর্শনী থেকে তাঁরা কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ছবি কিনেছিলেন। তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের লেখা ৯১ পাতার চিঠিতেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিক্রির প্রসঙ্গ আছে। সেই চিঠি সম্প্রতি গ্রহণ করেছে সিবিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Town Hall KMC CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE