প্রতীকী ছবি।
বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার তছরুপ-দুর্নীতির তদন্তে সিবিআই নেমে ব্যর্থ বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। শুধু মনে করা নয়, সুপ্রিম কোর্টে এ কথা জানিয়ে তারা বলেছে, ব্যর্থতার হতাশা থেকেই সিবিআই এখন রাজ্য পুলিশের উপরে দোষ চাপাচ্ছে। সিবিআইয়ের নানান অভিযোগের জবাবে শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে এ কথা জানিয়েছে রাজ্য।
সিবিআই গত ২ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালতে অভিযোগ করে, অর্থ লগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত মামলায় তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে রাজ্য পুলিশ। তারা সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারদের ডেকে হেনস্থা করছে। অথচ তদন্তের স্বার্থে কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও তিনি আসেননি। এই ধরনের বেশ কয়েকটি অভিযোগ ছিল সিবিআইয়ের।
এই সব অভিযোগ শুনে গত ২২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, লগ্নি সংস্থার মামলায় সিবিআইয়ের কাজে রাজ্য পুলিশ কোনও ভাবে নাক গলাতে পারবে না। অর্থ লগ্নি সংস্থা নিয়ে কোনও মামলা করে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ সিবিআইয়ের কোনও অফিসারকে ডেকে জেরাও করতে পারবে না। এই বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্যও জানতে চাওয়া হয়।
মাস তিনেক পরে সিবিআইয়ের প্রতিটি অভিযোগের জবাব দিল রাজ্য। সোমবার শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় রাজ্য বলেছে, রোজ ভ্যালি নিয়ে মামলা চালাচ্ছে সিবিআই। অথচ অদ্রিজা নাম দিয়ে রোজ ভ্যালির সোনার ব্যবসা রমরম করে চলছে। সেখানে বসে প্রচুর টাকা বেতন নিচ্ছেন রোজ ভ্যালির মামলায় মূল অভিযুক্ত গৌতম কুণ্ডুর নিকটাত্মীয়। রাজ্য সরকার এই অভিযোগ করলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মাস দুয়েক আগেই অদ্রিজার ব্যবসায় তালা পড়ে গিয়েছে। তাদের সব গয়না বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, সিপি রাজীব কুমারকে ডেকে পাঠানোর পরে তিনি ব্যস্ততার কথা জানিয়ে সে-দিনই ই-মেল করেন। এমনকী সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা যদি তাঁর অফিসে এসে কথা বলতে চান, তাতে তিনি রাজি বলে জানান। তাঁকে লিখিত প্রশ্ন পাঠালে তিনি তাঁর জবাবও দিতে পারেন। এত কিছুর পরেও মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় আবার তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। পুলিশ কমিশনার তখন বাধ্য হয়ে সিবিআই
অধিকর্তাকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন, তাঁর কাছে এ ভাবে সমন পাঠানোর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
সিবিআই অভিযোগ করেছিল, রাজ্য পুলিশের একাংশ সারদা গোষ্ঠী এবং অন্যান্য লগ্নি সংস্থার মামলায় বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে দিয়েছে। রাজ্যের পাল্টা অভিযোগ, আচমকা সাড়ে তিন বছর পরে এ ভাবে পুলিশকে দোষারোপের পিছনে ‘বাইরের কোনও কারণ’ আছে। এই বিষয়ে সিবিআই অধিকর্তাকে লেখা চিঠিতেও অভিযোগ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের ইঙ্গিত ওই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের দিকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy