Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূলে ছায়া অন্য ম্যাথুর

ম্যাথুর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি বাংলাদেশে গরু পাচারকারীদের সাহায্য করেন এবং নিয়মিত তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেন।কলকাতায় উড়ে এসে রবিবার একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কোচি নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। কলকাতায় তাঁর বাড়ি তল্লাশি করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে বলেও জানা গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০৪:৫৭
Share: Save:

এ রাজ্যের একাধিক ‘প্রভাবশালীকে’ বিপাকে ফেলেছিলেন ম্যাথু স্যামুয়েল। তাঁর গোপন ক্যামেরায় তোলা ছবিতে অনৈতিক ভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ লেগে যায় শাসক দলের অনেক নেতা-মন্ত্রীর গায়ে। আর এক ম্যাথুর জেরে এ বার আরও বেশ কিছু ‘প্রভাবশালী’ বিপাকে পড়তে পারেন বলে সিবিআই সূত্রের ইঙ্গিত। তিনি জীবু ডি ম্যাথু।

মুর্শিদাবাদে কর্মরত সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র এই কমান্ড্যান্টকে গত ৩১ জানুয়ারি কেরল থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ম্যাথুর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি বাংলাদেশে গরু পাচারকারীদের সাহায্য করেন এবং নিয়মিত তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেন। তাঁকে জেরা করে মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী মহম্মদ ইমানুল হকের নাম পান গোয়েন্দারা। তাঁর বিরুদ্ধে গরু পাচারের অভিযোগ রয়েছে। কলকাতায় উড়ে এসে রবিবার একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কোচি নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। কলকাতায় তাঁর বাড়ি তল্লাশি করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে বলেও জানা গিয়েছে।

সিবিআই সূত্রে দাবি, স্থানীয় ও রাজ্য স্তরের কিছু প্রভাবশালী নেতা ও পুলিশ অফিসারের নামও জানিয়েছেন ম্যাথু। বলেছেন, গরু পাচারের টাকার ভাগ এঁদের দিতেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচারের অভিযোগ বহু দিনের। এই চোরাচালানের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন, বিএসএফ এবং রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশেরও অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তবু পাচার বন্ধ হয়নি।

ম্যাথুকে গ্রেফতারের পরে গরু পাচারের জাল অনেকটাই উন্মোচিত হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। বিএসএফ-এর ওই কর্তা গত ৩১ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ থেকে ট্রেনে কেরলে নিজের বাড়িতে যাচ্ছিলেন ছুটি কাটাতে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর আসে, ম্যাথুর কাছে প্রচুর টাকা আছে। এর্নাকুলাম থেকে তাঁর পিছু নেয় সিবিআই। আলাপুঝা স্টেশনে ম্যাথু নামতেই তাঁকে ধরা হয়। সিবিআই জানিয়েছে, তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়।

ম্যাথু গরু পাচারের টাকা তৃণমূল নেতাদেরও দিতেন, সিবিআই সূত্রের এই দাবি প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। তাই মন্তব্য করব না। তবে কেন্দ্রীয় সরকার তো সব সময়ই তাদের হাতে থাকা এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের বদনাম করার চেষ্টা করে।’’

আর ইমানুলের আইনজীবী জাকির হুসেন বলেন, ‘‘ইনামুল ম্যাথুকে টাকা দিয়েছিলেন, এই সন্দেহের বশে তাঁকে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। আদালতে কোথাও গরু পাচারের কথা বলা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE