প্রতীকী ছবি।
বাজার থেকে তোলা বিপুল অর্থের বেশ বড় অংশ সংবাদমাধ্যমে লগ্নি করা সত্ত্বেও একটি পয়সা সারদার ঘরে ফেরত আসেনি বলে অভিযোগ। তা হলে কেন এবং কার নির্দেশে বিভিন্ন ভাষার বৈদ্যুতিন চ্যানেল ও সংবাদপত্রে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন সারদা-প্রধান সুদীপ্ত সেন? এ বার সেটা খতিয়ে দেখছে সিবিআই। ওই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সূত্রের খবর, সারদা নিয়ে ২০১৪ সালে রাজ্য সরকারের তরফে পেশ করা একটি হলফনামাকে এই ব্যাপারে হাতিয়ার করা হচ্ছে।
কী সেই হলফনামা?
রাজ্য সরকারের তরফে লিয়াজঁ অফিসার রাজদীপ দত্ত ওই হলফানামায় জানান, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলা, হিন্দি, উর্দু, পঞ্জাবি, নেপালি, অসমিয়া ভাষার সংবাদপত্রে অথবা বৈদ্যুতিন চ্যানেলে লগ্নি করেন সুদীপ্ত। মোট ১৮টি সংবাদমাধ্যমে লগ্নি করা হয়েছিল। মোটা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষকে সেই সব সংবাদমাধ্যম পরিচালনার দায়িত্ব দেন সুদীপ্ত।
সারদা মামলায় কুণালকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য সরকারের বিশেষ তদন্ত দল (সিট)। পরে সিবিআই-ও তাঁকে হেফাজতে নিয়েছিল। সিবিআইয়ের এক কর্তা জানান, হেফাজতে থাকাকালীন কুণাল ও সুদীপ্তকে একসঙ্গে বসিয়ে বার দুয়েক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন কুণাল দাবি করেন, বৈদ্যুতিন ও সংবাদপত্র মিলিয়ে মোট চারটি সংস্থা রেখে বাকিগুলি বেচে দেওয়ার জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন সুদীপ্তকে। কিন্তু সুদীপ্ত শোনেননি। বিরক্ত সুদীপ্ত তখন জানান, নির্দিষ্ট কারও নির্দেশে তিনি ওই সব সংবাদপত্র ও চ্যানেল চালাতে বাধ্য হয়েছিলেন। উঠে এসেছিল ডেলো পাহাড়ে বৈঠকের প্রসঙ্গও। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিন ও সংবাদপত্রে লগ্নি করে তাঁকে প্রচার চালানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল বলে জেরায় জানান সুদীপ্ত।
আরও পড়ুন: লিঙ্গ নির্ধারণ নয়, বোঝাবে পড়ুয়ারা
এই প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘আমার পারিশ্রমিকের সব হিসেব সিবিআই-কে দেওয়া হয়েছে। জমা দেওয়া হয়েছে আয়করের সব নথি। ওই পারিশ্রমিকের একটা মোটা অংশ কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে, তা-ও সিবিআই-কে জানানো হয়েছে।’’ সারদা বাজার থেকে প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা তুলেছিল বলে জানান সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী। সিবিআইয়ের অভিযোগ, সেই টাকার প্রায় ১৮ শতাংশই সংবাদমাধ্যমে বিনিয়োগ করেছিল সারদা। অথচ মিডিয়া ব্যবসা থেকে এক পয়সাও ফেরত আসেনি সারদার ঘরে। অভিযোগ, কার্যত একটি রাজনৈতিক দলের হয়েই ওই সব সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিন চ্যানেলে প্রচার চালানো হয়েছিল। কিছু সংবাদমাধ্যমে টাকা ঢালার পরেও তা চালু করা হয়নি। সেই টাকা ফেরতও পায়নি সারদা।
পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউট্যান্ট ও ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অমিতাভ মজুমদারকে সম্প্রতি দিল্লি ও সল্টলেকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। ‘‘তদন্ত চলাকালীন সারদার সংবাদমাধ্যমে বিনিয়োগের বিষয়ে প্রচুর তথ্য সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন অমিতাভবাবু। পরে তা যাচাই করে সত্যতাও মিলেছে। সেই জন্য ফের অমিতাভাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে,’’ বলেন সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy