Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নারদ কাণ্ডে চার্জশিট দেওয়ার প্রস্তুতি সিবিআই-এর, দিল্লি গেল ‘নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ’

নারদ কাণ্ডে অভিযুক্তদের কন্ঠস্বর রেকর্ড করে আমদাবাদে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে সিবিআই। নারদের ভিডিয়োয় যে সব কণ্ঠস্বর (অভিযুক্ত নেতানেত্রীদের) শোনা গিয়েছে, তার সঙ্গে তাঁদের নতুন করে নেওয়া কণ্ঠস্বরের নমুনা মেলানো হবে।

মুকুল রায় ও আইপিএস অফিসার সঈদ মহম্মদ হুসেন মির্জা।—ফাইল চিত্র।

মুকুল রায় ও আইপিএস অফিসার সঈদ মহম্মদ হুসেন মির্জা।—ফাইল চিত্র।

সুনন্দ ঘোষ ও শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২৭
Share: Save:

নারদ কাণ্ডে চার্জশিট দেওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করল সিবিআই।

এই মামলায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের আইপিএস অফিসার সঈদ মহম্মদ হুসেন মির্জা। তাঁকে জেরার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের মধ্যে ‘একমাত্র মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে’ কিছু ‘নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ’ পাওয়া গিয়েছে এবং তা দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে বলে তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি। এখন দিল্লি থেকে পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করা হবে। মুকুলবাবু অবশ্য বারবারই দাবি করেছেন, তিনি কোনও লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত নন। প্রসঙ্গত, নারদ ভিডিয়ো প্রথম প্রকাশের সময়ে মুকুল ছিলেন তৃণমূলে। বর্তমানে তিনি বিজেপিতে। সম্প্রতি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতায় এলে একই মঞ্চে বক্তৃতাও করেছেন মুকুল।

নারদ কাণ্ডে অভিযুক্তদের কন্ঠস্বর রেকর্ড করে আমদাবাদে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে সিবিআই। নারদের ভিডিয়োয় যে সব কণ্ঠস্বর (অভিযুক্ত নেতানেত্রীদের) শোনা গিয়েছে, তার সঙ্গে তাঁদের নতুন করে নেওয়া কণ্ঠস্বরের নমুনা মেলানো হবে। সিবিআই সূত্রের খবর, চূড়ান্ত চার্জশিটের আগে ওই রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই মামলায় তৃণমূল নেতা, কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর ইকবাল আহমেদের কণ্ঠস্বর শুধু মেলানো যায়নি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর কণ্ঠস্বর অনেকটাই বসে গিয়েছে। মুকুল রায় বা ফিরহাদ হাকিমের মতো যাঁদের ভিডিয়োয় সরাসরি টাকা নিতে দেখা যায়নি, তাঁদের কণ্ঠস্বরের নমুনা মেলানো হচ্ছে না।

মির্জা গ্রেফতার হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছিল, এর পরে কার পালা? তবে সিবিআই সূত্রের খবর, এই ধরনের মামলায় অভিযুক্তদের কেউ তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারেন — এমন অভিযোগ না-থাকলে গ্রেফতার করা যাবে না। শুধু দুর্নীতি দমন আইনে সিবিআই চার্জশিট দিলে অভিযুক্তদের আদালতে গিয়ে জামিন নিতে হবে।

নারদ কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও তদন্ত চালাচ্ছে। ইডি সূত্রের খবর, সিবিআই চার্জশিট দেওয়ার পরে দেখা হবে, কী ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। তার উপরে ভিত্তি করে ইডি সঙ্গতিহীন আয় এবং ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং’ আইনে চার্জশিট দিতে পারে। সিবিআই ও ইডি কর্তাদের মতে, তার পরে শুনানি চলবে আদালতে। বিচারক কাউকে দোষী সাব্যস্ত করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতায় এসেছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। বহুজাতিক সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি দেখা করেন কয়েক জন নেতা-মন্ত্রী এবং মির্জার সঙ্গে। এ-ও জানান, তাঁর সংস্থা এই রাজ্যে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক। তাই আগে থেকেই কিছু টাকা তাঁর সংস্থা প্রভাবশালীদের দিতে চায়। নারদ সংস্থার প্রকাশিত ভিডিয়োয় (ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) দেখা যায়, বেশ কয়েক জন নেতা, মন্ত্রী, সাংসদের হাতে ম্যাথু টাকা তুলে দিচ্ছেন। আদালতের নির্দেশে নারদ কাণ্ডে তদন্তে নামে সিবিআই এবং ইডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBI Narada Case Charge Sheet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE