Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

তটস্থ সল্টলেকের সিবিআই অফিসও

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে শিলংয়ের অফিসে। সেখানে তৎপরতা তুঙ্গে তো বটেই।

সিজিও কমপ্লেক্সে।—ফাইল চিত্র।

সিজিও কমপ্লেক্সে।—ফাইল চিত্র।

শুভাশিস ঘটক
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৫
Share: Save:

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে শিলংয়ের অফিসে। সেখানে তৎপরতা তুঙ্গে তো বটেই। সেই সঙ্গে ব্যস্ততার নিরিখে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁদের দফতরটিও ‘ওয়ার রুম’ হয়ে উঠেছে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।

সিবিআইয়ের শিলং দফতরে রাজীবের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে শনিবার থেকে। কলকাতা অফিসেও সক্রিয়তা চরমে। রবিবার ছুটির দিন, তার উপরে ছিল সরস্বতী পুজো। তাতেও এক ঘণ্টা ছাড় পাননি সিজিও-র তদন্তকারীরা। সিবিআইয়ের পূর্বাঞ্চলের যুগ্ম অধিকর্তা পঙ্কজ শ্রীবাস্তব শনিবার সকাল থেকেই নিজাম প্যালেসের দফতরে হাজির ছিলেন। মেঘালয় সদর দফতর থেকে রাজীবের জেরার তথ্য প্রতি ঘণ্টায় হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ মারফত তাঁর কাছে আসছে। সেই তথ্য অনুযায়ী শিলংয়ে যে-সব নথি পাঠানোর কথা, তিনি নিজাম প্যালেস থেকে সেগুলো পাঠিয়ে দিচ্ছেন সিজিও-র অফিসে।

সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি ও কলকাতার অফিসারদের দু’টি দল পালা করে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সিজিও অফিসের এক তদন্তকারী জানান, শিলংয়ের অফিসে সুপারিনটেন্ডেন্ট পি এস কল্যাণের নেতৃত্বে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কলকাতার দলটি। ওই দলে মূলত সারদা মামলার তদন্তকারী অফিসার ডিএসপি তথাগত বর্ধনই সিপি-কে প্রশ্ন করার দায়িত্বে রয়েছেন। কেননা সারদা মামলায় তিনি আছেন গোড়া থেকেই। সিবিআইয়ের দিল্লির সদর দফতরের যে-বিশেষ দল সিপি-কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে, তার নেতৃত্বে আছেন সুপারিনটেন্ডেন্ট জগরূপ।

আরও পড়ুন: সুর ‘নরম’ রাজীবের! দাবি করল সিবিআই

কিন্তু সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতর ‘ওয়ার রুম’ হয়ে উঠল কেন?

সিবিআই-কর্তারা জানান, বাংলার অর্থ লগ্নি সংস্থার মামলার বিষয়ে দিল্লির দলের অফিসারদের তেমন কিছু জানা নেই। তবে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা খুবই পারদর্শী। অন্য দিকে, কলকাতায় সিবিআইয়ের দফতরে নবনিযুক্ত এসপি কল্যাণেরও ওই মামলা সম্পর্কে তেমন প্রস্তুতি নেই। সেই জন্য সিপি-কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কোনও ফাঁকফোকর ধরা পড়লেই ই-মেল বা ফ্যাক্স মারফত নথিপত্র পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে কলকাতার অফিসারদের। শিলংয়ে দুই তদন্ত দলকেই সকাল থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য জুগিয়ে চলেছেন সিজিও-র অফিসারেরা। কলকাতায় পার্থ মুখোপাধ্যায় নামে সিবিআইয়ের এক এসপি-র নেতৃত্বে অন্তত ২৮ জন অফিসার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে চলেছেন।

মেঘালয় থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে যোগাযোগ কেন? ‘‘মাথায় রাখতে হবে, কলকাতা পুলিশের সিপি-কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সে-ক্ষেত্রে কোনও ফোনই নিরাপদ নয় বলে মত দিল্লির কর্তাদের। শিলং অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে শুধু হোয়াটসঅ্যাপ এবং গোপন ই-মেলের মাধ্যমে,’’ বলেন সিজিও কমপ্লেক্সের এক সিবিআই-কর্তা। তিনি জানান, প্রয়োজনে কলকাতা থেকে বিমানে কোনও অফিসারের হাতে প্রয়োজনীয় নথি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে শিলংয়ের অফিসে। সিপি-কে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও কিছুই যাতে প্রকাশ্যে না-আসে, সেই বিষয়ে দিল্লির সদর দফতর থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ষুগ্ম অধিকর্তা শ্রীবাস্তব শিলং ও কলকাতার সমন্বয় অফিসার হিসেবেই কাজ করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE