Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ওয়াগন চোর কে, তদন্তে সিবিআই

রেল বোর্ডের খবর, কমবেশি ৭০টি পরিত্যক্ত ওয়াগন চুরির অভিযোগ উঠেছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা। জামালপুর ওয়ার্কশপে মালগাড়ির ওয়াগন সারাই হয়।

সোমনাথ চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৬
Share: Save:

পূর্ব রেলের জামালপুর ওয়ার্কশপ থেকে পরের পর ওয়াগন চুরি যাচ্ছে। উদ্বিগ্ন রেল বোর্ড অভিযোগের তদন্তভার সিবিআই-কে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৬ সেপ্টেম্বর পূর্ব রেলের চিফ সিকিওরিটি কমিশনার (আরপিএফ)-কে চিঠি দিয়ে সে-কথা জানিয়ে দিয়েছে রেল বোর্ড।

চিঠিতে জানানো হয়েছে, ওয়াগন চুরির ঘটনা নিয়ে পূর্ব রেলের যে রিপোর্ট পরীক্ষা করে আরপিএফের ডিজি এর তদন্তের দায়িত্ব সিবিআই-কে দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিকিওরিটি কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁর অফিস যেন এই নিয়ে অবিলম্বে একটি রিপোর্ট তৈরি করে সিবিআই-কে দেয়। বিষয়টি ‘মোস্ট আর্জেন্ট’, অত্যন্ত জরুরি।

রেল বোর্ডের খবর, কমবেশি ৭০টি পরিত্যক্ত ওয়াগন চুরির অভিযোগ উঠেছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা। জামালপুর ওয়ার্কশপে মালগাড়ির ওয়াগন সারাই হয়। পুরনো ওয়াগন কেটে ছাঁট হিসেবে বিক্রিও হয় নিলামে। সেখান থেকেই হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছে রেলের বিভিন্ন ডিভিশন থেকে সারাই হতে আসা প্রায় ৭০টি ওয়াগন।

রেকর্ড বলছে, ওয়াগনগুলো জামালপুরেই এসেছিল। তা হলে গেল কোথায়? তদন্তে নেমে রেলকর্তারা জানতে পারেন, অন্যান্য ছাঁট লোহার সঙ্গে পরিত্যক্ত ওয়াগনও কেটে ‘ছাঁট’ হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খাতায় তার কোনও রেকর্ড নেই! ফলে রেল কিছুই পায়নি। ঘুরপথে ওয়াগন বিক্রির কয়েক কোটি টাকা গিয়েছে কিছু লোকের পকেটে। এই দুর্নীতিতে রেলেরই কিছু কর্ম-অফিসারের জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত সাধু

রেলকর্তাদের একাংশের দাবি, রেলে টিকিট-জালিয়াতির তদন্তের দায়িত্বও কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া উচিত। রেলকর্তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন, বিভিন্ন স্টেশনের অসংরক্ষিত টিকিটের কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হুহু করে কমে যাচ্ছে! কয়েক হাজার স্টেশনের অসংরক্ষিত কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি কমেছে বিপুল ভাবে। সেই তালিকারই একেবারে উপরের দিকে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের রাঁচী ডিভিশনের হটিয়া স্টেশন।

কী ভাবে হচ্ছে এই চুরি? রেল সূত্রের খবর, প্রিন্টারের সুইচ অফ করে দিয়ে কম দূরত্বের কিছু টিকিটকে ‘বাতিল’ হিসেবে সেভ করে রাখা হচ্ছে। পরে দূরের গন্তব্য লিখে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে সেই বাতিল টিকিট। এই বদলটা আর কম্পিউটারে ‘সেভ’ করা হচ্ছে না। রেল জানছে, ওই টিকিট বিক্রি হয়নি। বেশি দামে টিকিটটা বেচে দিয়ে সেই টাকা পকেটে পুরছেন ওই সব কাউন্টারে বসা সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CBI Wagon Breakers ওয়াগন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE