—ফাইল চিত্র।
বিরোধের প্রসঙ্গ এমনিতেই অঢেল। কেন্দ্র-রাজ্য নতুন সংঘাতের পটভূমি তৈরি করছে বিমানবন্দর প্রকল্প।
বিনা পয়সায় বিমানবন্দরের জন্য তারা এক ছটাক জমিও দেবে না বলে স্থির করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও কলকাতা বিমানবন্দরের বিকল্প প্রকল্পের ক্ষেত্রে এই অবস্থানই নিয়েছে রাজ্য। কেন্দ্রও ওই সব প্রকল্পে জমির জন্য টাকা দিতে রাজি নয়। এই টানাপড়েনে প্রকল্প ঘিরে তৈরি হচ্ছে জট।
নবান্ন সূত্রের খবর, বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের জন্য আগেই রাজ্যের কাছ থেকে জমি চেয়েছিলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই কাজে পার্শ্ববর্তী একটি চা-বাগানের জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজ্য জানিয়ে দিয়েছিল, ক্ষতিপূরণের টাকা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের অঙ্কে জমির দাম ছাড়াও ধরা হয়েছে পরিকাঠামোর খরচ। রাজ্যের প্রস্তাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এখনও রাজি হয়নি। রাজ্য সরকারও নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ। রাজ্যের যুক্তি, ওই প্রকল্পের জন্য চা-বাগানের জমি ছাড়াও সরকারের খাস জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই জমির জন্য কোনও অর্থ নেওয়া হবে না। কিন্তু যে-হেতু বিমানবন্দরের একটি বাণিজ্যিক দিকও রয়েছে, তাই চা-বাগানের জমির জন্য ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে হবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকেই।
কলকাতার বিকল্প বিমানবন্দরের জন্য প্রায় কয়েক হাজার একর জমির প্রয়োজন। সেই জমিও বিনামূল্যে দিতে নারাজ রাজ্য। তাদের যুক্তি, জনস্বার্থে যেখানে জমির প্রয়োজন, সেখানে নিখরচায় জমি দেওয়া হয়। কিন্তু বিমানবন্দর পরিকাঠামো বাণিজ্যিক ভাবেও ব্যবহৃত হয়। তাই সেখানে সরকারি জমি নিখরচায় জমি দেওয়া গেলেও ব্যক্তিমালিকের কাছ থেকে সরাসরি যে-জমি কিনতে হয়, তা নিখরচায় জমি দেওয়ার প্রশ্ন নেই।
এই অবস্থান কি শেষ পর্যন্ত রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না? প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, কল্যাণীতে প্রস্তাবিত এইমস পরিকাঠামো তৈরির জন্য এক টাকার বিনিময়ে ২০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিমানের টিকিটে বিমানবন্দর উন্নয়নের খাতে কিছু পরিমাণ অর্থ ধরা থাকে। যাত্রীদের গাড়িও বিনামূল্যে বিমানবন্দরের এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না। আবার বিমানবন্দরের ভিতরে থাকা ফুড স্টল-সহ বিভিন্ন দোকান থেকেও অর্থ সংগ্রহ করেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ‘‘এই লাভের অংশীদার নয় রাজ্য। সেই জন্য জমির অর্থ পুরোপুরি মকুব করা সম্ভব নয়,” বলেন ওই কর্তা।
তবে কিছু দিন আগে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র কলকাতায় বলেছিলেন, নতুন বিমানবন্দর তৈরি হলে বা চালু বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ হলে আখেরে লাভ হয় রাজ্যেরই। কারণ, তাতে কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ— সবই বাড়ে। অর্থ দিয়ে জমি নিলে তা উদাহরণ হয়ে যাবে। অন্য রাজ্যও তখন নিখরচায় জমি দিতে রাজি হবে না। ফলে কাজ করতে অসুবিধা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy