পুলিশ তো আছেই। সাইবার অপরাধ ঠেকাতে বেসরকারি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করারও পরামর্শ দিচ্ছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যকে চিঠিতে লিখেছে, সাইবার অপরাধের তদন্তে আন্তঃরাজ্য ও আন্তর্জাতিক সমন্বয় বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি, সাইবার আইন, সাইবার ফরেন্সিকের মতো বিষয়ে বেসরকারি পেশাদার নিয়োগ করাও জরুরি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব কুমার অলোকের পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্যের সব সাইবার মামলার নজরদারি ও সমন্বয়ের জন্য এডিজি বা আইজি পদমর্যাদার এক জন অফিসারের নেতৃত্বে বিশেষ শাখা গড়তে হবে। সাইবার অপরাধ দমন শাখা চাই জেলাতেও। তৈরি করতে হবে উন্নত সাইবার ল্যাবরেটরি। রাজ্য ও জেলায় পুলিশের সঙ্গে এই ধরনের পেশাদার নিয়োগ করতে হবে।
কলকাতা পুলিশ বা সিআইডি-র সাইবার ল্যাবে পুলিশ অফিসারেরাই প্রযুক্তির দিক সামলান। কিন্তু অপরাধীরা যে-ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তাতে একা পুলিশের পক্ষে সামাল দেওয়া মুশকিল। এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘ওয়াননা ক্রাই’ র্যানসমঅয়্যার বা সম্প্রতি বিটকয়েন কেলেঙ্কারিতে যে-ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, তার তদন্ত করতে গেলে প্রযুক্তির জ্ঞান প্রয়োজন। একই কথা প্রযোজ্য সাইবার আইনের ক্ষেত্রে। অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ আইনজীবীরা এই ধরনের মামলার আইনি দিক সামলাতে পারেন না।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞেরা কি শুধু পুলিশের হয়ে কাজ করতে চাইবেন? সরকারি কোষাগার থেকে তাঁদের পারিশ্রমিক দেওয়া কি সম্ভব?
পুলিশি সূত্রের খবর, সিআই়ডি এক বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এথিক্যাল হ্যাকার (যাঁরা আইন রক্ষায় পুলিশি পরামর্শে হ্যাক করেন। কারও অনিষ্ট করা বা অপরাধের উদ্দেশ্যে নয়।) নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। কিন্তু মিলেছিল অনভিজ্ঞ কয়েক জনকে। কারণ, মাসিক ৪০ হাজার টাকায় এক বছরের চুক্তিতে ওই কাজে অভিজ্ঞ পেশাদারেরা রাজি হননি। ইন্ডিয়ান স্কুল অব এথিক্যাল হ্যাকিংয়ের অধিকর্তা সন্দীপ সেনগুপ্তের মতে, ‘‘এ-সব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ পেশাদার নিয়োগ করতে গেলে অনেক টাকা পারিশ্রমিক দিতে হবে। সেটা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সত্যিই ধন্দ রয়েছে।’’
চুক্তি-নিয়োগে তদন্তের তথ্য সুরক্ষিত থাকবে কি, প্রশ্ন তুলছেন সাইবার মামলার বিশেষ কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, স্থায়ী নিয়োগ এবং পারিশ্রমিকও এই ধরনের নিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ দিক। এ রাজ্যে সরকার পক্ষের সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ বলতে একমাত্র তিনিই। বিভাসবাবু বলেন, ‘‘সরকারের কাছে আরও কৌঁসুলি নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। খসড়া তালিকাও তৈরি হয়েছিল। তা বাস্তবায়িত হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy