পুরস্কৃত সেই ছবি। ইনসেটে খুদে শিল্পী চয়নিকা দাস। —নিজস্ব চিত্র।
পড়াশোনার ফাঁকেই রং-তুলি নিয়ে কাগজে আঁকিবুকি কাটত একরত্তি মেয়েটা। আঁকার প্রতি ওই আগ্রহ দেখে শিশু শ্রেণিতে পড়ার সময়ই মেয়েকে আঁকার স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন বাবা-মা। সেই মেয়ে এ বছর জাপানের কানাগাওয়ায় আন্তর্জাতিক শিশু অঙ্কন প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ পুরস্কার জিতেছে। বিশ্বের ৯২টি দেশের ২৩ হাজার ৮২৬ জন প্রতিযোগীর মধ্যে দু’জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর মধ্যেই রয়েছেন তমলুক শহরের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া চয়নিকা দাস। চয়নিকা ছাড়াও তমলুকের প্রিয়ম পট্টনায়েক এবং শেখ আরিয়ানও ওই প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছে।
১২ বছরের চয়নিকা তমলুকের রাজকুমারী সান্ত্বনাময়ী উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। বাবা বাসুদেব দাস ডাকঘরের স্বল্প সঞ্চয় এজেন্ট, মা নীলিমা দাস গৃহবধূ। চয়নিকার ছবি আঁকার প্রতি জেদ দেখে বাবা-মা তাকে ভর্তি করেছিলেন তমলুকের একটি আর্ট স্কুলে। সেখানেই গত সাত বছর ধরে ছবি আঁকা শিখছে সে। গত অক্টোবরে জাপানের কানাগাওয়ায় বিশ্ব শিশু অঙ্কন প্রতিযোগিতায় চয়নিকার আঁকা ‘মুন লাইট’ নামে একটি ছবি পাঠিয়েছিলেন তার আঁকার স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই স্কুলের হয়ে আরও ৭০ পড়ুয়ার ছবি পাঠানো হয়েছিল।
জাপানে ওই অঙ্কন প্রতিযোগিতার দু’টি বিভাগে। একটি জাপানের পড়ুয়াদের জন্য। অন্যটি বিশ্বের অন্য দেশের প্রতিযোগীদের নিয়ে। জাপানের ছেলেমেয়েদের বিভাগে অংশ নিয়েছিল ৩,৭৭৩ জন প্রতিযোগী। তাতে পুরস্কারের জন্য বাছাই করা হয়েছে ১৩০ জনকে। এতে গ্র্যান্ড প্রাইজ এক জাপানি শিশু। আর বিদেশি বিভাগে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা-সহ ৯২টি দেশের ২৩ হাজার ৮২৬ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৩৫০ প্রতিযোগীকে পুরস্কারের জন্য বাছাই করা হয়েছে। আর তার মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মান ‘গ্র্যান্ড প্রাইজে’র জন্য নির্বাচিত হয় চয়নিকা এবং শ্রীলঙ্কার এক পড়ুয়া ইন্দুরণপিতিয়া কঙ্কামালেগা ডিমালকা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আগামী ৭ জুলাই জাপানের ইয়োকোহামা শহরে কানাগাওয়া ‘প্লাজা’ হলে পুরস্কার দেওয়া হবে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে চয়নিকাকে। তার বাবা বাসুদেব দাস বলেন, ‘‘পড়াশোনার বাইরে ছবি আঁককে ভালবাসত। ওই এমন সাফল্যে আমরা খুব উৎসাহিত।’’ চয়নিকার কথায়, ‘‘আঁকার শিক্ষিকা হতে চাই।’’ উল্লেখ, এর আগেও চয়নিকা কলকাতার নেহেরু চিলড্রেনস মিউজিয়ামে শিশুদের জন্য অঙ্কন প্রতিযোগিতায় পরপর দু’বছর ফাইনালে উঠেছিল।
তমলুকের যে আর্ট স্কুলে চয়নিকা আঁকা শেখে, তার কর্নাধার সনাতন দাস বলেন, ‘‘চয়নিকা প্রতিভাবান। আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা প্রতি বছরই জাপানের ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তবে এমন সাফল্য আগে আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy