বাউন্স হওয়া চেক। নিজস্ব চিত্র
‘বাউন্স’ করল রেলের দেওয়া ক্ষতিপূরণের চেক। ফলে নাজেহাল হতে হচ্ছে সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনে দুর্ঘটনায় আহত এক পরিবারকে। তাদের দাবি, এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে পরিবারের একজনের চিকিৎসাও। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়েছে রেলের অন্দরেও। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রেলের টাকা নেই, এ তো হতে পারে না। নিশ্চয় কোথাও ভুল হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’’
গত ২৩ অক্টোবর হাওড়ার সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের। জখম হন অন্তত ১২ জন। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে রেল। গুরুতর জখম এবং আহতদের যথাক্রমে এক লক্ষ এবং ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়।
আহতদের মধ্যে ছিল মানিকতলার সুকিয়া স্ট্রিটের বাসিন্দা সাউ পরিবার। স্ত্রী কিরণ, বছর দশেকের পুত্র অকসত এবং সাত বছরের মেয়ে অর্ণাকে নিয়ে কেরল ঘুরে ফিরছিলেন হনুমন্ত সাউ। রেলের তরফে অকসত এবং তাঁর বাবা হনুমন্তের জন্য এক লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। কিরণ পান ৫০ হাজার টাকার চেক। কোনও চেকই ভাঙানো যায়নি। হনুমন্ত বলেন, ‘‘গত ২৯ অক্টোবর ১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার চেকটি প্রথমবার ব্যাঙ্কে জমা করি। ৩১ অক্টোবর ব্যাঙ্ক জানিয়ে দেয়, চেক ‘বাউন্স’ করেছে। ২ নভেম্বর, ওই চেক এবং ৫০ হাজার টাকার চেক ব্যাঙ্কে জমা করেন হনুমন্তেরা। গত সোমবার সেই চেকগুলি ফিরিয়ে ব্যাঙ্ক বলেছে, ‘কাইন্ডলি কনট্যাক্ট ড্রয়্যার, ড্রয়ি ব্যাঙ্ক অ্যান্ড প্লিজ প্রেজেন্ট এগেন’। ছেলেকে দেখব, না টাকার জন্য ছুটব?’’
ঘটনার পরে হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল সাউ পরিবারকে। পরে তাঁরা মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। গত পরশু হনুমন্ত, কিরণ এবং অর্ণাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও অকসত এখন ভর্তি গার্ডেনরিচের রেল হাসপাতালে। চোখ এখনও ফুলে রয়েছে। ডান হাতেও ব্যান্ডেজ। হনুমন্তের দাবি, ‘‘ছেলের চিকিৎসা চলছে। টাকার প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া টাকা পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু, রেল এমন ক্ষতিপূরণ দিলই বা কেন, যা কাজে লাগানো যায় না।’’
সাউ পরিবারের হাতে চেকটি পৌঁছে দিয়েছিলেন হাওড়া স্টেশনের টিটি অরুণাভ দাস। চেক ‘বাউন্স’ করার অভিযোগ নিয়ে তাঁরা এরপরে অরুণাভবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মঙ্গলবার অরুণাভবাবু বলেন, ‘‘কী করে হল, বুঝতেই পারছি না। আমরা খড়্গপুরে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ফাইল পাঠিয়েছি।’’
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (ক্লেম) শৈবাল বসু বলেন, ‘‘আমরাও অবাক। নিশ্চয় কোথাও ভুল হয়েছে। ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলছি।’’ ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারিও বললেন, ‘‘ওই পরিবার ক্ষতিপূরণ অবশ্যই পাবেন। সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy