Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পছন্দসই পাঠের সুরাহা করতে পদ বাড়ছে কলেজে

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের প্রতিটি কলেজে চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ চালু হয়ে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০৮
Share: Save:

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের প্রতিটি কলেজে চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ চালু হয়ে গিয়েছে। এই পদ্ধতিতে পছন্দের বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে পড়ুয়াদের। কিন্তু অনেক বিষয় পড়াতে গিয়ে কলেজ-কর্তৃপক্ষকে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। কারণ শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব। তাই এ বার স্থায়ী শিক্ষকপদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

নতুন বন্দোবস্ত নিয়েও অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগের তুলনায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

স্নাতক স্তরে কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ্য বিভাগের বিষয়গুলিতে অনার্স এবং জেনারেল কোর্সে ক’জন স্থায়ী শিক্ষক থাকবেন, নির্দেশিকায় তা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে কলেজগুলিতে স্নাতকোত্তর স্তরে এই প্রথম স্থায়ী পদের ব্যবস্থা করা হল। এ ক্ষেত্রে বিষয়-পিছু দু’টি পদ থাকবে। আগে ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়ে অন্য বিষয়ের থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা বেশি থাকতেন। ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয় আর ল্যাবরেটরি-নিরপেক্ষ বিষয়— এই ধরনের ভাগাভাগি করা হয়নি নতুন নির্দেশিকায়। তাতে আগের থেকে ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়ের শিক্ষক সংখ্যা কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এতেই ছড়িয়েছে ক্ষোভ।

অধ্যক্ষ শিবিরের বক্তব্য, আগে এই ধরনের কোনও নিয়ম মেনে শিক্ষকপদের কথা বলা ছিল না। তখন প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দেশ দিত সরকার। আগে মোটামুটি নিয়ম ছিল: ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়ের অনার্সে সাত জন, অন্যান্য বিষয়ের অনার্সে চার জন, বাংলা, ইংরেজি, অঙ্কে পাঁচ জন, জেনারেলে দু’জন করে শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকবেন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা পাল্টানোও হত। কিন্তু সদ্য-ঘোষিত নির্দেশিকায় বিভিন্ন বিষয়ে অতীতের তুলনায় শিক্ষক বাড়লেও কমেছে ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়ে শিক্ষক-সংখ্যা কমেছে।

ওয়েবকুটা-র রাজ্য সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজের বক্তব্য, ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়ে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো উচিত ছিল। তবে নতুন নির্দেশে যে-ভাবে শিক্ষক-সংখ্যা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, শিক্ষক-সংখ্যা বাড়ানোর শুধু নির্দেশ দিলেই হবে না। তা রূপায়ণও করতে হবে। ‘‘বহু কলেজেই প্রচুর শিক্ষকপদ খালি পড়ে আছে। পদ পূরণের জন্য শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতি আনতে হবে,’’ বলেন শ্রুতিনাথবাবু।

অন্য শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র সভাপতি তরুণকান্তি নস্করের বক্তব্য, সিবিসিএসে (অনার্স ও জেনারেল মিলিয়ে) ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়ে সপ্তাহে অন্তত ১১৮ ঘণ্টা আর ল্যাবরেটরি-নিরপেক্ষ বিষয়ে অন্তত ৯৬ ঘণ্টা ক্লাস নিতে হবে। অথচ ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়েও শিক্ষকের সংখ্যা সাতের পরিবর্তে এখন থেকে ছয় হয়ে যাবে। অর্থাৎ এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকা কমে যাবেন। ‘‘নতুন নিয়মে ১১৮ ঘণ্টা ক্লাস নিতে হবে ছ’জন শিক্ষককে। ফলে ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা খুবই চাপের মুখে পড়বেন,’’ বলছেন তরুণবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Choice based credit system College UGC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE