ভারতীর স্বামী এম এ ভি রাজু। ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হতেই সাদা পোশাকের পুলিশ আদালত কক্ষের বাইরে ‘কর্ডন’ করে দাঁড়িয়ে পড়ল। প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষের স্বামী এমএভি রাজু তখনও বুঝে উঠতে পারেননি, ঠিক কী ঘটতে চলেছে। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি হাইকোর্টের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের ৩৪ নম্বর আদালত থেকে বেরোতেই তাঁকে ঘিরে এগোতে থাকে সাদা পোশাকের এক দল পুলিশ। রাজুকে গাড়িতে তুলে সটান নিয়ে যাওয়া হয় ভবানী ভবনে। সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরা রাজুকে জানিয়ে দেন, দাসপুর থানার মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার প্রতারণা এবং জোর করে সোনা আদায়ের মামলায় রাজু অভিযুক্ত। চন্দন মাঝি নামে সেখানকার এক সোনার দোকানের মালিক ওই অভিযোগ জানান। সেই মামলায় হাইকোর্টে ফেব্রুয়ারিতে আগাম জামিনের আবেদন জানান রাজু। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয়। এ দিন বিকেলে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আগাম জামিনের আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি ছিল। ডিভিশন বেঞ্চ রাজুর আবেদন খারিজ করে দেয়।
রাজুর আইনজীবী ভাস্কর সেন সওয়ালে জানান, বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর মক্কেল সিআইডি তদন্তে সহযোগিতা করছেন। তদন্তকারী অফিসারের কাছে নিয়মিত হাজিরাও দিচ্ছেন। মামলার চার্জশিটও নিম্ন আদালতে জমা পড়েছে। তাই তাঁর মক্কেলকে সিআইডি-র হেফাজতে নিয়ে আর জেরা করার প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন: জন্মাষ্টমী এবং এনআরসি ঘিরে রাজ্যে অশান্তির শঙ্কা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এবং পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় আগাম জামিনের বিরোধিতা করেন। তাঁরা জানান, তদন্তে নেমে কলকাতার নাকতলা ও মাদুরদহের আবাসনের দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদ কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার করেছে সিআইডি। ফ্ল্যাটের মালিক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে জানান, রাজু কিছু জিনিস রাখার অছিলায় তাঁর কাছ থেকে ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে নেন। তিনি জানতেও পারেননি, সেখানে টাকা, গয়না, জমিজায়গার প্রচুর দলিল রেখে দেওয়া হয়েছে। নোট বাতিল পর্বে কমবেশি আড়াই কোটি টাকার সোনা কিনে সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। কেনা হয়েছিল কিছু জমিও। কোথা থেকে ওই টাকা এল, আর কোনও ভাবে তা খরচ হয়েছে কি না, তার তদন্ত দরকার। তাই রাজুকে জেরা করা করতে চায় সিআইডি।
এজি জানান, প্রতারণা ও জোর করে সোনা আদায়ে জড়িত ছিলেন বেশ কিছু পুলিশ অফিসার। মূল অভিযুক্ত রাজুর স্ত্রী ভারতী এখনও অধরা। রাজু একাধিক বার তদন্তকারীর কাছে হাজিরা দিলেও তাঁকে যা জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তার ঠিকঠাক জবাব দেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy