সোনা গলিয়েও রেহাই মিলবে না! যন্ত্রই দেবে তথ্যের হদিস।
সোনা-প্রতারণা মামলায় পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপারর ভারতী ঘোষের নাম জড়ানোর পরে জেলার একের পর এক সোনা কারবারিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল সিআইডি। এ বার গোয়েন্দাদের নজর গলানো সোনায়। সিডিআই সূত্রের খবর, নোট বাতিল পর্বে কে, কত সোনা গলিয়েছিলেন তার উপর নজরদারি শুরু হয়েছে।
গোয়েন্দারা জেনেছেন, নোটবন্দি পর্বে পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক স্বর্ণকারের থেকে বাতিল নোটে ১৮০ কিলোগ্রাম সোনা কেনা হয়েছিল। রাখার সুবিধার জন্য বেশ কিছু পরিমাণ সোনা গলিয়েও ফেলা হয়েছিল। গয়না গলিয়ে বানানো হয়েছিল সোনার বাট। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার দাসপুর জুড়ে রয়েছে বহু সোনা গলানোর দোকান। সেখানকার একাধিক সোনা ব্যবসায়ীকে জেরা করে এ সম্পর্কে তথ্য মিলেছে বলে সিআইডি সূত্রে খবর। তার ভিত্তিতেই গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন, নোট বাতিল পর্বে কোন দোকানে, কে, কত সোনা গলিয়েছিলেন।
কী ভাবে মিলবে এই তথ্য? গোয়েন্দাদের ভরসা স্পেকটোমিটার। সোনা গলানোর এই যন্ত্র প্রায় প্রতিটি দোকানেই থাকে। এতে গয়না বা বাট দিলে সোনা নকল না আসল তা বোঝা যায়। কম্পিউটার চালিত এই যন্ত্রে কত পরিমাণ সোনা ওজন হয়েছিল এবং খাঁটি সোনা সংক্রান্ত সব তথ্য মজুত থাকে। ফলে মেশিনের হার্ডডিস্ক পেলেই বোঝা যাবে, সংশ্লিষ্ট দোকানে কতটা সোনা লেনদেন হয়েছিল। দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখছে সিআইডি।
কিন্তু এক বছরের বেশি পুরনো তথ্য কি স্পেকটোমিটারে থাকবে? জানা গিয়েছে, কিছু মেশিনে প্রায় দেড় বছর আগের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। কিছু মেশিনে থাকে দু’মাসের। গোয়েন্দাদের বক্তব্য, যে ক্ষেত্রে পুরনো তথ্য মিলবে না, সেখানে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণে জোর দেওয়া হবে। সিআইডি সূত্রের খবর, ঘাটাল ও দাসপুরে দশ-বারোটি দোকানেই মূলত সোনা গলানোর কারবার হয়েছিল। গভীর রাত পর্যন্ত সোনা গলানো হতো। এক সিআইডি কর্তার দাবি, “বেশিরভাগ লেনদেনই হয় সোনা গলানোর দোকানে। মালিকদের জেরা করলে সব জানা যাবে।” সিআইডি সূত্রের খবর, নোট বাতিল পর্বে ঘাটাল ও দাসপুরে রাতারাতি একাধিক দালাল চক্রও গজিয়ে ওঠে। চক্রের সদস্যদের কাজই ছিল সোনার সন্ধান দেওয়া। কোন দোকানে, বাড়িতে বা ব্যবসায়ীর কত সোনা রয়েছে তা জেনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হত। ভারতী-মামলার সূত্রে সে সবই এখন গোয়েন্দাদের নজরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy