দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজ
দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্র রাজনীতির নামে কোনও রকম কর্তৃত্ব দেখানোর চেষ্টা করবে না বলে বৃহস্পতিবারই কড়া হঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের মূল সংগঠনের সঙ্গে মিলেমিশে যুবদের কাজ করতেও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই নেত্রীর নির্দেশ অমান্যের ঘটনা ঘটল কলকাতার অ্যান্ড্রুজ কলেজে। কোচবিহার জেলায় দলীয় কর্মসূচিতে সামিল হল না জেলার যুব সংগঠন।
কলেজে ছাত্র সংসদের ‘কর্তৃত্ব’ নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে। তার জেরে এ দিনই দলের তরফে কলেজের টিএমসিপি ইউনিট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভেঙে দেওয়া হয়েছে কলেজের পরিচালন সমিতিও। মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনকে সতর্ক করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই অ্যান্ড্রুজের ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছে শাসক দল ও শিক্ষা প্রশাসন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলেজে এ সব বরদাস্ত করব না। ছাত্র ভর্তিতে ছাত্র সংসদের কোনও ভূমিকা থাকবে না। ছাত্ররা আসবে পড়াশোনা করবে, বাড়ি চলে যাবে।’’
অ্যান্ড্রুজ কলেজে এ দিন ধুন্ধুমার বাঁধে স্নাতকস্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীনই। অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের সমর্থকেরাই প্রথম অশান্তি শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল বহু বহিরাগত। ভাঙচুর করা হয় অধ্যক্ষের দফতর। কলেজে পরীক্ষা চলায় পুলিশি পাহারা ছিল আগে থেকেই। গোলমাল কলেজ ছেড়ে বাইরেও চলে আসে। এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে শেষ পর্যন্ত পাটুলি থানা এবং যাদবপুর থানা থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কলেজের ভেতরেও পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে।
ভর্তি হতে আসা পড়ুয়া, অভিভাবকেরাও এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান। বাপ্পাদিত্য যদিও গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘কয়েক মাস কলেজেই যাইনি। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে ১০ জুন ইস্তফা দিয়েছি।’’ তবে তাঁর প্রশ্ন তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী কেন এ দিন কলেজে ঢুকেছিলেন? অরূপবাবুর বক্তব্য, ‘‘দলেরই এক কাউন্সিলর দেবব্রত মজুমদারের ছেলে এই কলেজের ছাত্র। তাঁকে মারধর করা হয়েছে শুনে কলেজে গিয়েছি।’’ এই ঘটনার কথা জেনে শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থবাবু জানিয়েছেন, যে বহিরাগতরা কলেজে ঢুকেছিলেন, তাঁরা কঠোর শাস্তি পাবেন।
দলনেত্রীর হুঁশিয়ারির পরেও যুব ও মূল তৃণমূলকে কাছাকাছি দেখা গেল না কোচবিহারে। প্রকাশ্যে সকলেই একসঙ্গে চলার কথা বললেও বাস্তবটা যে তা নয়, তা স্পষ্ট কোচবিহারের ঘটনাতেই। কোচবিহারে তৃণমূলের ডাকা অবস্থান বিক্ষোভে দেখা যায়নি যুব নেতাদের। যদিও দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘যুব-র অনেকেই এসেছেন।’’ ওই জেলার যুব সভাপতি পার্থপ্রতীম রায় জানিয়েছেন, তিনি কলকাতায়। তাই এই কর্মসূচিতে থাকতে পারেননি। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন থেকে শুরু করে গণনার পর পর্যন্ত তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের সংঘর্ষে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে কোচবিহার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy