Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

বাড়ি প্রকল্পে ‘তোলা’, মমতার রোষে আব্বাস

শুক্রবার কলকাতায় ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করেন আব্বাসউদ্দিন। তাঁর দাবি, তিনি যে নির্দোষ সে ব্যাখ্যাই দিয়েছেন ফিরহাদকে। আব্বাস বলেন, ‘‘উপভোক্তারাই ঠিকা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছেন। আমি কিছু জানি না।’’

আব্বাসউদ্দিন খান

আব্বাসউদ্দিন খান

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০৫:১০
Share: Save:

গরিবের জন্য বাড়ি। টাকা দেবে সরকার। কিন্তু নেতা আছেন মাঝখানে! উপভোক্তা, ঠিকাদার— দু’তরফেই লাভের গুড়টি বুঝে নিতে চান তিনি। এমনই অভিযোগ গিয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে।

তৃণমূলের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়ার উপ-পুরপ্রধান আব্বাসউদ্দিন খানের দিকে সরাসরি আঙুল তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্প থেকে তোলা চাওয়ার অভিযোগ আব্বাসের বিরুদ্ধে। আগামী সাত দিনের মধ্যে ভুল সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।

শুক্রবার কলকাতায় ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করেন আব্বাসউদ্দিন। তাঁর দাবি, তিনি যে নির্দোষ সে ব্যাখ্যাই দিয়েছেন ফিরহাদকে। আব্বাস বলেন, ‘‘উপভোক্তারাই ঠিকা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছেন। আমি কিছু জানি না।’’

এ দিন জগদীশপুরে আব্বাসের ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল একটি বাড়ির কাজও শেষ হয়নি। ২০১১ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, ওই ওয়ার্ডের ৬৭৮ বাসিন্দাকে প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। বাস্তুজমি থাকলে এই প্রকল্পে সরকারের সাত কিস্তিতে ৩ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। সরাসরি টাকা যায় উপভোক্তার হাতে। পুরসভা ঠিকাদার নিয়োগও করতে পারে না।

অভিযোগ, সে নিয়ম ভেঙেছেন আব্বাসউদ্দিন। উপভোক্তাদের দাবি, টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরে ৬৭৮ জনকে নিয়ে বৈঠক করে আব্বাস জানিয়ে দেন, নিজেরা বাড়ি তৈরি করলে ঝামেলা। তাঁর চেনা ঠিকাদারকে দিয়েই যেন সকলে বাড়ি করান। ব্যাঙ্কে টাকা ঢুকলে চেক সই করে যেন সকলেই তাঁর হাতে দেন। ৬৭৮ জনের পাসবইও জমা রাখেন তৃণমূলের এক নেতা। প্রথমে রাজি হননি দু’এক জন। কিন্তু অভিযোগ, তাঁদের আব্বাস জানিয়ে দেন, বাড়ি তৈরির সময় ‘অসুবিধা’ হলে তিনি পাশে দাঁড়াবেন না। এর পর নাকি আর কেউ আপত্তি করার ‘সাহস’ দেখাননি।

ঠিকাদার সংস্থার অভিযোগ, চার-পাঁচ মাস আগে কাজ শুরুর সময় থেকেই নানা দাবি করতে থাকেন আব্বাস। সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘নেতার কথায় ১০ জন কর্মী রাখতে হয়েছে মাসে ১০ হাজার টাকা বেতনে। ক্লাব ইত্যাদির জন্য ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা চাওয়া হয়। এ ছাড়াও নানা অছিলা তো ছিলই।’’ অভিযোগ, এক বার দাবি মতো কাজ না হওয়ায় ম্যানেজার-সহ অন্য কর্মচারীদের বেঁধে রাখা হয়। যদিও আব্বাসের দাবি, এ সবই মিথ্যা অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘নিম্নমানের জিনিস দিয়ে বাড়ি তৈরি হচ্ছিল বলে তাঁরাই ওই সংস্থার কর্মীদের আটকে রাখেন। আমি বরং উদ্ধার করি।’’

ঠিকা সংস্থাটির কর্ণধার ইন্দ্রজিৎ রায় বলেন, ‘‘এ ভাবে কাজ হয় না। গরিব মানুষগুলোকে ঠকানো হয়। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ করেছি। তবে কাজ আমরা বন্ধ করিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE