—ফাইল চিত্র।
১৭ জন পর্যটক। তিনটি ছোট গাড়ি। গভীর জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় একটি গাড়ি বিকল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অন্য দুই ছোট গাড়ির চালকদেরও কোনও হদিশ নেই। বেড়াতে এসে জঙ্গলে তখন কার্যত দিশেহারা অবস্থায় আটকে পড়েছেন পর্যটকেরা। সেসময় হঠাৎই ত্রাতা হয়ে পর্যটকদের মুখোমুখি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকালে এমন ঘটনাই ঘটল ডুয়ার্সের গরুমারা জাতীয় উদ্যানে।
টিলাবাড়ি থেকে বেরিয়ে গরুমারা জাতীয় উদ্যান লাগোয়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে জঙ্গলের পথে পড়ন্ত বিকেলে হাঁটতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকেরা। সেই জঙ্গলের পথেই মুখ্যমন্ত্রী অসহায় অবস্থায় আটকে পড়া পর্যটকদের দেখতে পান। জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ দাঁড় করিয়ে দ্রুত তাঁদের বাসের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। পর্যটকেরা সকলেই কলকাতার বাসিন্দা এবং তাঁরা হাসিমারায় ফিরছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। এর পর পুলিশের সাহায্যে বাসে করে ওই পর্যটকদের সেখানে পৌঁছে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য বেলা দুটোর পর কোচবিহার থেকে কপ্টারে করে ডুয়ার্সের বাতাবাড়ির অস্থায়ী হেলিপ্যাডে নামেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে দু’কিমি দূরে টিলাবাড়ির পর্যটন দফতরের কটেজের পথে জঙ্গলের নিস্তব্ধতাকে সম্মান জানিয়ে, হুটার না বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় প্রবেশ করে। কটেজের বাইরে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানান মালবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা। কিছুক্ষন বিশ্রাম করে এর পর বেলা সাড়ে তিনটার সময় পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে সঙ্গে নিয়ে গরুমারার দিকে এগোন মুখ্যমন্ত্রী। পরে সেখানে যোগ দেন এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীও।
এ দিন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “জঙ্গলের পরিবেশে অসহায় পর্যটকদের যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধার করলেন তা কেবল তাঁকেই মানায়। এই কারণেই তো তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” হুটার বন্ধ রেখে কনভয়ের এগিয়ে চলা নিয়েও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন অনেকেই। “মুখ্যমন্ত্রী ডুয়ার্সের প্রকৃতিকে এতটাই ভালবাসেন যে জঙ্গলের নীরবতাকে সম্মান জানিয়ে হুটার বন্ধ রেখে কটেজে আসেন তিনি।” এমনটাই মত এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর। মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে প্রথমে জঙ্গলে নিঃশব্দে প্রবেশ করলেন এবং পরে পর্যটকদের পরিত্রাতা হয়ে উঠলেন তাতে উচ্ছ্বসিত লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সচিব দিব্যেন্দু দেব বলেন, “রাজ্যের পর্যটন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কতটা দায়বদ্ধ তা, এর থেকেই বোঝা যায়।” এদিন গরুমারা থেকে ছ’কিমি হেঁটে ফেরার পথে টিলাবাড়ির স্থানীয় এক বাসিন্দার চপের দোকান থেকে চপ, তেলেভাজা কিনে পুলিশকর্মীদের খাওয়ান মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy