Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নজর এ বার চা বলয়ে

একদিকে জঙ্গল। অন্যদিক থেকে চা বাগানের শুরু। এমন একটি জায়গাতেই মঞ্চ বাঁধা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার।

সতর্কতা: টিলাবাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌঁছনোর মুখে প্রহরা। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

সতর্কতা: টিলাবাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌঁছনোর মুখে প্রহরা। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৬:৩৯
Share: Save:

একদিকে জঙ্গল। অন্যদিক থেকে চা বাগানের শুরু। এমন একটি জায়গাতেই মঞ্চ বাঁধা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার। সরকারি নানা প্রকল্পের পরিষেবা বিলি হবে, শিলান্যাস-সূচনা রয়েছে কিছু প্রকল্পের। তারপরে জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার— দুই জেলার আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক হবে গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া টিয়াবন এলাকার এই অনুষ্ঠান থেকে।

নাগরাকাটা বিধানসভার অর্ন্তগত এই এলাকার সবুজ চা বলয়ে পঞ্চায়েত ভোটে ইতিউতি পদ্ম ফুল ফুটেছে। পরিসংখ্যানও বলছে ডুয়ার্সের চা বলয়ে বিজেপির সংগঠন বাড়ছে লম্বা পা ফেলে। নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির ৯১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৮৭ এবং বিজেপি পেয়েছে ২৯। ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে একটি দখল করেছে গেরুয়া শিবির। মূলত চা বাগানের জনজাতি মানুষ এবং ডুয়ার্সের নেপালি ভাষাভাষীদের ‘বার্তা’ দিতেই তাই জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক সভা চা বাগানের কোলে হচ্ছে বলে দল সূত্রে খবর। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “মনে রাখতে হবে, গত পঞ্চায়েত ভোটের আগে চা বলয়ে বিজেপির মূল শক্তি জন বার্লাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। লোকসভা ভোটের আগে তেমনটা নাও হতে পারে। তাই আগে থেকেই নিজেদের ঘর শক্তপোক্ত করে নিচ্ছেন নেত্রী।”

তৃণমূল সূত্রের দাবি, শুধু চা বলয় নয়, অস্বস্তি রয়েছে কৃষি বলয়েও। পঞ্চায়েত ভোটের পরে ছেলেধরা গুজবে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ক্রান্তি। আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ ফাঁড়ি। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ ছিল, বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে। বিজেপি অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করে। সেই ঘটনার পর থেকে ক্রান্তি, ময়নাগুড়ি এলাকায় গোপনে আরএসএস বিভেদমূলক রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। আজ, বুধবার যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হবে তার থেকে ক্রান্তির দূরত্বও বেশি নয়। লোকসভা ভোটের আগে ক্রান্তির পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দেবেন বলেও মনে করা হচ্ছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের বার্তা দিতেই জেলায় জেলায় ছুটে যান। উনি মানুষকে ভালবাসে। বিরোধীরা সবেতেই রাজনীতি দেখেন।”

এ দিন সভা মঞ্চ থেকে চা বলয়ের জন্য একাধিক প্রকল্প ঘোষণা হতে চলেছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। সরকারি সভায় চা শ্রমিকদের নিয়ে আসার জন্য ভার পড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার তৃণমূল নেতাদের ওপর। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, কোচবিহারের সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া টিলাবাড়িতে থাকবেন বলে স্থির হয়েছিল। তার কাছাকাছি কোথাও সভা আয়োজন হয়েছে। তবে তৃণমূল নেতারাই দাবি করছেন মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা থাকবে চা বলয়ের জন্য। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বললেন, “মুখ্যমন্ত্রী জনজাতি, নেপালি ভাষাভাষী সকলকে ভালবাসেন। তাঁরাও দল বেঁধে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনতে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Tea garden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE