কোচবিহার তথা দিনহাটায় তৃণমূল বনাম যুবর লড়াই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তিতিবিরক্ত।— ফাইল চিত্র।
এর আগে চ্যাংরাবান্ধায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে দিনহাটার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডেকে। কিন্তু গত তিন মাসে তৃণমূল বনাম যুবর মধ্যে গণ্ডগোল তো কমেইনি, উল্টে দিন কয়েক আগে এক যুব তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকে দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্তকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
দলীয় সূত্রের খবর, কোচবিহার তথা দিনহাটায় তৃণমূল বনাম যুবর লড়াই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তিতিবিরক্ত। এ দিন তিনি পাঁচ মিনিট সমস্ত বিধায়ক ও সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ও ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককে মুখ্যমন্ত্রী ওই বিষয়ে সতর্ক করে দেন। নেতাদের ভূমিকায় তিনি যে সন্তুষ্ট নন, পরে মঞ্চে এসেও তা বুঝিয়ে দেন। তবে তৃণমূলের অন্দরেরই বক্তব্য, পুরো বক্তৃতায় কখনও মুখ্যমন্ত্রী যুবর দিকে সরাসরি আঙুল তোলেননি। বরং, তিন মাস আগে তিনি দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডেকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেখানে এ বারে সরাসরি থানার আইসি-র সঙ্গে কথা বলেন।
সভার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, দিনহাটা থানার আইসি কে আছেন? সঞ্জয়বাবু উঠে দাঁড়ালে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, কেন দিনহাটায় বারবার গণ্ডগোল হচ্ছে? আইসি জানান, দু’মাস আগে তিনি এই থানায় যোগ দিয়েছেন, তার পরে ছাত্র মৃত্যু নিয়ে একটি গণ্ডগোল হয়েছে। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা গণ্ডগোল করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন। তাঁদের ধরুন। পরিষ্কার জানিয়ে দিন, ওই ব্যাপারে সরকারের নির্দেশ রয়েছে। কোনও নেতাগিরি আমি শুনব না।’’
আরও পড়ুন: তিন দিনে জমি সাবেক ছিটমহলে
দিন কয়েক আগে দিনহাটা কলেজের ছাত্র অলকনিতাই দাস খুন হন। তিনি যুব তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ঘটনায় নাম জড়ায় এক তৃণমূল কাউন্সিলর এবং ঘটনায় সময় যিনি ছাত্র পরিষদের কোচবিহার জেলা সভাপতি ছিলেন, তাঁরও। এই দু’জনই উদয়ন ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এ বারে তাই মুখ্যমন্ত্রী সবার বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে মনে করছেন তৃণমূলের একটি অংশ। অন্য একটি অংশের ব্যাখ্যা, সম্প্রতি জেলার দায়িত্বে যুবর প্রধান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা এবং এ দিন যুবর দিকে কোনও রকম আঙুল না তোলার একটাই কারণ হয়— ঘুরিয়ে যুবদের পাশে দাঁড়ানোরই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
উদয়নবাবু অবশ্য বলেন, “আমরাও চাই, যারা গণ্ডগোল করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” পার্থবাবুও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র বৈঠকে দাবি করেন, গত তিন মাসে দিনহাটা তথা কোচবিহার থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। তা জারি রাখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy