Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

একসঙ্গে শৃঙ্গ জয় কোচবিহার বীরভূমের

সিউড়ি থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দূরে কোচবিহার শহরের জেনকিন্স স্কুলের ছেলেটি কিন্তু মাধ্যমিকে মেধা-তালিকায় ছিলেন না। তার পর থেকে লক্ষ্য স্থির করে নেন রাজর্ষি বর্মণ।

উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম শোভন মণ্ডল (বাঁ দিকে) ও রাজর্ষি বর্মণ। নিজস্ব চিত্র।

উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম শোভন মণ্ডল (বাঁ দিকে) ও রাজর্ষি বর্মণ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ০৩:৩৩
Share: Save:

এক জন দু’বছর আগে মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন। তাই তাঁর ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন স্কুলের শিক্ষকেরা। তিনি সিউড়ির বীরভূম জেলা স্কুলের ছাত্র শোভন মণ্ডল। প্রত্যাশার চাপ সামলে উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় যুগ্ম ভাবে রাজ্য শীর্ষে শোভন। ফল জানার পরে তিনি বলছেন, ‘‘রেজাল্ট ভাল হবে জানতাম। তবে প্রথম হব ভাবিনি।’’

সিউড়ি থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচশো কিলোমিটার দূরে কোচবিহার শহরের জেনকিন্স স্কুলের ছেলেটি কিন্তু মাধ্যমিকে মেধা-তালিকায় ছিলেন না। তার পর থেকে লক্ষ্য স্থির করে নেন রাজর্ষি বর্মণ। এ দিন ফল প্রকাশের পরে দেখা যায়, পাঁচশোয় ৪৯৮ নম্বর পেয়ে শোভনের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে প্রথম তিনিও। এ দিন রাজর্ষির প্রতিক্রিয়া, “এখনও অনেক পথ বাকি।”

অথচ এই ছেলে ইচ্ছে হলে বই নিয়ে বসতেন, ইচ্ছে হলে গল্পের বই। সুযোগ পেলেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্পের বই হাতে তুলে নিতেন। কখনও আবার টেলিভিশনের সামনে বসে গানে মগ্ন হয়ে পড়তেন। বাবা-মা অবশ্য সে জন্য ‘পড়তে বসো’ বলে জোর করতেন না। ‘‘কারণ, ছেলের প্রতি বিশ্বাস ছিল আমাদের,’’ বলছিলেন রাজর্ষির বাবা বিষ্ণুপদ বর্মণ। জেনকিন্সেরই শিক্ষক বিষ্ণুবাবু। রাজর্ষির মা প্রীতিদেবী কোচবিহার উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা। এ দিন শিলিগুড়িতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন রাজর্ষি। তাই বিকেলের আগে বাড়ির কারও সঙ্গে দেখা হয়নি। পরীক্ষার হল থেকে বেরোতেই মা জড়িয়ে ধরেন তাঁকে। সকলেই মুখে খুশির আলো।

রাজর্ষি ইংরেজি, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, অঙ্ক এবং জীববিজ্ঞানে পেয়েছেন একশোয় একশো। আর বাংলায় ৯১। সিউড়ির শোভন বাংলা, অঙ্ক, রসায়নে পেয়েছেন একশোয় একশো। ইংরেজি আর জীববিজ্ঞানে ৯৯ করে। দু’জনেরই সেরা পাঁচটি বিষয়ে পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৮। যা দেখে শোভনের বাবা, ময়ূরেশ্বরের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সুভাষ মণ্ডল এবং মা নূপুরদেবী বলছেন, ‘‘তুই যা দিয়েছিস, আমাদের আর চাওয়ার কিছু নেই।’’

ক্রিকেট খুব প্রিয় শোভনের। প্রিয় ক্রিকেটার বিরাট কোহালি। তবে তাঁর আদর্শ এপিজে আব্দুল কালাম। শোভনের তথায়, ‘‘ওঁর সব কথাই অনুপ্রেরণা।’’ চিকিৎসকের অভাবে দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। তাই ডাক্তার হতে চান শোভন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE