Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সেই সাপ জ্যান্ত! কলেজে ডাক পড়ল সাপুড়ের

গ্রামবাসীর মারধরে ‘মৃত’ ময়াল সংরক্ষণের জন্য কলেজে নিয়ে গিয়েছিলেন এক স্কুল শিক্ষক। কিন্তু, গায়ে রাসায়নিক ছড়াতেই বোঝা গেল, সাপ জ্যান্ত! ল্যাবরেটরির টেবিলের তলায় সুড়ুৎ করে ঢুকে পড়ল ময়াল।

পাখির টোপ দিয়ে সাপ বার করে আনার চেষ্টা। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

পাখির টোপ দিয়ে সাপ বার করে আনার চেষ্টা। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪২
Share: Save:

গ্রামবাসীর মারধরে ‘মৃত’ ময়াল সংরক্ষণের জন্য কলেজে নিয়ে গিয়েছিলেন এক স্কুল শিক্ষক। কিন্তু, গায়ে রাসায়নিক ছড়াতেই বোঝা গেল, সাপ জ্যান্ত! ল্যাবরেটরির টেবিলের তলায় সুড়ুৎ করে ঢুকে পড়ল ময়াল।

এর জেরে শনিবার বিকেলে হুলস্থূল পড়ে যায় বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের জীববিদ্যার ল্যাবরেটরিতে। অধ্যক্ষের কথায় ডেকে আনা হয় সাপুড়েকে। তিনি জখম সাপটিকে বস্তাবন্দি করে নিয়ে যান। কলেজের কয়েকশো মিটারের মধ্যে বন দফতরের অফিস থাকা সত্ত্বেও বনকর্মীদের না ডেকে কেন সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ সাপুড়েকে ডেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ সাপটি তুলে দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জখম ময়ালটিকে লেজ ধরে টেনেহিঁচড়ে টেবিলের তলা থেকে বার করে বস্তায় ভরার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায়। ২০১৩ সালে নাক-এর তরফে ‘এ’ গ্রেড পাওয়া জেলার প্রাচীন এই কলেজের এমন সিদ্ধান্ত ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সাপুড়ে সেই সাপটিকে শহরের কোথাও ছেড়ে দিলেন না কি, এ নিয়েও অনেকে সংশয় প্রকাশ করেন।

গঙ্গাজলঘাটির কুখড়াজোড় হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক বৈদ্যনাথ দাস মোদক শনিবার বাড়ি ফেরার পথে দেখেন, কিছু লোক প্রায় সাত ফুট লম্বা ময়ালটিকে পিটিয়ে মেরে পোড়ানোর তোড়জোড় করছেন। বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজেরই জীববিদ্যার প্রাক্তন ছাত্র বৈদ্যনাথ তাঁদের বোঝান, সাপটিকে সংরক্ষণ করলে ছাত্রদের সুবিধা হবে। তখন গ্রামবাসীই বস্তায় ভরে সাপটিকে তাঁর মোটরবাইকে তুলে দেন। কলেজে নিয়ে গেলে কর্মীরা সাপটিকে সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু করেন। আর তখনই বিপত্তি!

বৈদ্যনাথ বলেন, ‘‘সাপটিকে ল্যাবরেটরির টেবিলের উপরে ঘোরাঘুরি করতে দেখে ভয় পেয়ে যাই। খানিক বাদেই টেবিলের তলায় ঢুকে পড়ে। অধ্যক্ষকে ফোনে করতে তিনি সাপুড়ে ডাকতে বলেন। কলেজের এক কর্মী তাঁর পরিচিত সাপুড়েকে ডেকে আনেন।’’ নানা মহলে প্রশ্ন ওঠায় রবিবার বিকেলে কলেজের অধ্যক্ষ ফটিকবরণ মণ্ডল বনকর্মীদের সঙ্গে সাপুড়ের ডেরা, বাঁকুড়া শহর লাগোয়া পলাশতলা শ্মশানের জঙ্গলে যান। সাপুড়ে দাবি করেন, একটি বদ্ধ ঘরে আরও কিছু সাপের সঙ্গে ময়ালটিকে তিনি রেখেছেন। বনকর্মীরা সাপটিকে ধরতে টোপ হিসেবে একটি পাখি ঘুলঘুলির কাছে রেখে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেন। কিন্তু, ময়াল বাবাজির দেখা মেলেনি। আদৌ ওই ঘরে ময়ালটি আছে কিনা, বা থাকলেও বেঁচে কিনা, তা নিয়েও সংশয়ে বনকর্মীরা।

অধ্যক্ষ জানান, তখনকার মতো সাপুড়ে ডেকে এনে সাপটিকে ধরে জঙ্গলে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বন দফতরকে খবর দিইনি এটা সত্যি। কিন্তু, সাপটার ক্ষতিও না করতে নির্দেশ দিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Snake Snake Charmer College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE