Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পদপিষ্ট হয়েই মৃত্যু, দাবি দুই মৃতের সঙ্গীদের

ভেঙে গিয়েছে মেলা। ফিরতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। সাগরের বাতাসে এখন শুধু রবিবারের মৃত্যু নিয়ে জল্পনা! কেন্দ্রের দাবি, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকারের পাল্টা দাবি, অসুস্থ হয়ে। এই তরজার মধ্যে মৃত দু’জনের সঙ্গীরা পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর পক্ষেই সওয়াল করেছেন সোমবার।

শান্তশ্রী মজুমদার
সাগর শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

ভেঙে গিয়েছে মেলা। ফিরতে শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। সাগরের বাতাসে এখন শুধু রবিবারের মৃত্যু নিয়ে জল্পনা!

কেন্দ্রের দাবি, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকারের পাল্টা দাবি, অসুস্থ হয়ে। এই তরজার মধ্যে মৃত দু’জনের সঙ্গীরা পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর পক্ষেই সওয়াল করেছেন সোমবার।

মকর সংক্রান্তির স্নানের পরে সাগরমেলা থেকে ফেরার পথে রবিবার অনেকেই অপেক্ষা করছিলেন কচুবেড়িয়ার জেটি ঘাটে। ৪ এবং ৫ নম্বর জেটিতে ভিড় ছিল অন্যগুলির থেকে বেশি। জোয়ার না হলে মুড়িগঙ্গায় ভেসেল চলে না। পুণ্যার্থীরা দীর্ঘক্ষণ জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভেসেল আসার পরে হুড়োহুড়ি হয়। ধাক্কাধাক্কিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিন জন। পরে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়। রবিবার মৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। সোমবার ওই তিন জন-সহ পাঁচ জনের নাম জানা গিয়েছে। জানা যায়, ওই সময়ে মৃত্যু হয়েছিল মোট ছ’জনের। দু’জনের সঙ্গে আসা লোকেরা পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথাই জানিয়েছেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন বিহারের রাধিকা দেবী (৭০)। ছেলে রতিশ ঝা এবং এবং বৌমার সঙ্গে তিনি মেলায় এসেছিলেন। এ দিন সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে মায়ের দেহ নিতে এসেছিলেন রতিশ। তাঁর দাবি, ‘‘দু’দিন ধরে জেটিতে অপেক্ষা করছিলাম। রবিবার সন্ধ্যায় ৫ নম্বর জেটিতে খুব ভিড় ছিল। ভেসেলে কে আগে উঠবে, তাই নিয়ে হুড়োহুড়িতেই মা অনেক মানুষের পায়ের তলায় চলে যান।’’ একই দাবি আর এক মৃত মহারাষ্ট্রের পদ্মিনী সুতারের (৫১) সঙ্গে আসা লোকজনের। একটি দলের সঙ্গে এসেছিলেন তিনি। দলের এজেন্ট নাগেশ ওয়াগলেও দাবি করেন, ‘‘ভেসেলে ওঠার তাড়াহুড়োতে হাত ফসকে গিয়ে অনেক লোকের পায়ের তলায় চলে যায় পদ্মিনী দেবী।’’

এ ছাড়া, আরও যে তিন মৃতের এ দিন ময়না-তদন্ত হয়, তাঁরা হলেন বিহারের ভাগ্যমণি দেবী (৪৫), সাবিত্রী দেবী (৫১) এবং লালবতী দেবী (৬৫)। বছর পঞ্চাশেক আর এক মহিলার পরিচয় জানা যায়নি। ময়না-তদন্তের রিপোর্টেও ঠান্ডায় হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই ওই ছয় মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে লেখা হয়েছে। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের দেহে কোনও চোট-আঘাত পাইনি। প্রবল ঠান্ডায় ওঁরা সকলেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।’’এ দিনই নামখানা এবং চেমাগুড়িতেও আরও দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এই নিয়ে এ বারে সাগরে মৃত পুণ্যার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল ১০।

শালবল্লা দিয়ে তৈরি অস্থায়ী যে জেটিকে ঘিরে এই ঘটনা, এ দিন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয়েরা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় ফেরার জন্য ৫ নম্বর জেটির কাছে ৫০-৬০ হাজার পুণ্যার্থী হাজির ছিলেন। প্রশাসনের কর্তারা জানান, এ বার প্রায় আড়াই গুণ লোক বেশি হয়েছিল। মেলা শেষে কচুবেড়িয়ার দিকে আসা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করেই ছাড়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন জেলাশাসক পি বি সেলিম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gangasagar Stampede Dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE