Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষকদের শাস্তির বিজ্ঞপ্তিতে বিভ্রান্তি

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যে-সব শিক্ষক সহযোগিতা করেননি অর্থাৎ খাতা দেখা বা পরীক্ষকের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছেন, তাঁদের শাস্তির সুপারিশ করে এ মাসেই বিভিন্ন স্কুল-কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন সংসদের উত্তরবঙ্গের অফিসের সহ-সচিব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩০
Share: Save:

আইন বদলে গিয়েছে গত মার্চে। অথচ পুরনো নিয়মে শিক্ষকদের শাস্তির সুপারিশ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের উত্তরবঙ্গ অফিস! এই নিয়ে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষা শিবিরে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্য সরকার আইন সংশোধন করা সত্ত্বেও সেটা সংসদের অজানা থাকে কী ভাবে?

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যে-সব শিক্ষক সহযোগিতা করেননি অর্থাৎ খাতা দেখা বা পরীক্ষকের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছেন, তাঁদের শাস্তির সুপারিশ করে এ মাসেই বিভিন্ন স্কুল-কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন সংসদের উত্তরবঙ্গের অফিসের সহ-সচিব। ২০০০ সালের একটি নিয়মের উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের একটি বা তিনটি ‘ইনক্রিমেন্ট’ বা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বন্ধ করা উচিত। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। গোল বেধেছে ওই চিঠিতে লেখা একটি নির্দেশ নিয়ে। নির্দেশটি হল, ২০০০ সালের নিয়ম মেনে পরিচালন সমিতি বা প্রশাসক এই বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করুন এবং চিঠি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে জানান, তাঁরা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিন্তু এ বছর মার্চে সংশোধিত আইন অনুযায়ী এই ক্ষমতা পরিচালন সমিতির হাতে আর নেই। এই ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে একমাত্র মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অফিস থেকে এই ধরনের চিঠি পেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিভ্রান্ত।

পর্ষদের এক কর্তা জানান, পুরনো নিয়মে এই ক্ষমতা পরিচালন সমিতির হাতেই ছিল। আইন সংশোধনের পরে তা পর্ষদের হাতে আসে। এখন পরিচালন সমিতি আর এ-সব করতেই পারে না। সে-ক্ষেত্রে ওই সুপারিশটি ফের পর্ষদের পাঠাতে পারে স্কুলের পরিচালন সমিতি।

দীর্ঘদিন আগে আইন বদলানো সত্ত্বেও এই বিভ্রাট কেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে শিক্ষা শিবিরের একাংশ। তাদের প্রশ্ন, সংসদ থেকে যে-সুপারিশ সরাসরি পর্ষদে পাঠানো যেত, সেটা পরিচালন সমিতিকে পাঠানো হল এবং পুরনো আইনের উল্লেখ করে সমিতিকে পদক্ষেপও করতে বলা হল। তা হলে কি সংশোধিত আইন সম্পর্কে সংসদের কোনও ধারণাই নেই, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে? এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাসকে বারবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন তোলেননি, জবাব দেননি টেক্সট মেসেজেরও।

কলেজিয়াম অব এএইচএম-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘এটা অদ্ভুত যে, সংসদের তরফ থেকে এ রকম বিভ্রান্তিকর চিঠি পাঠানো হচ্ছে। এর ফলে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে অনেক দেরি হয়ে যাবে।’’ শিক্ষা সূত্রের খবর, ক্ষমতা না-থাকলেও রাজ্যের অনেক জায়গায়, বিশেষ করে শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলে ক্ষমতার আস্ফালন দেখায় পরিচালন সমিতি। কারণ সংশোধিত আইন সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল নন। কিন্তু সংসদের তরফেও এই ধরনের ভুল হওয়ায় শিক্ষকেরাও হতবাক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Notice Confusion WBCHSE
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE