সব কিছু ঠিক থাকলে আজ, সোমবার শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র এবং চেয়ারম্যান নির্বাচন পর্বে অংশ নেবেন না কংগ্রেস এবং বিজেপি’র কাউন্সিলররা।
দুই দলের তরফেই তাদের কাউন্সিলরদের এ ব্যাপারে হুইপ জারি করা হয়েছে। রবিবার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস কাউন্সিলর সীমা সাহার তরফেও পাড়ায় নাগরিক সভা ডেকে এ ব্যাপারে বাসিন্দাদের মতামত নেওয়া হয়েছে। তাতে জানিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁদের একাংশকে মেয়র পারিষদ হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সমর্থন করার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে যেমন তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে তেমনই লড়াই করতে হয়েছে গত বারের জোট সঙ্গী তৃণমূলের সঙ্গেও। তা ছাড়া মানুষের রায় বামেদের পক্ষেই রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস এবং জেলা কংগ্রেসের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শপথ গ্রহণ পর্ব সেরে দলের কাউন্সিলররা চলে আসবেন। মেয়র বা চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নেবেন না কংগ্রেসের চার জন কাউন্সিলর। একই ভাবে বিজেপি’ ১ এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর শপথ গ্রহণ পর্ব সেরে ফিরে আসবেন। মেয়র, চেয়ারম্যান নিবার্চনে তাঁরাও অংশ নেবেন না।
জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে নানা ভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। কংগ্রেসকে জড়িয়ে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড গঠন নিয়ে তারা নানা রটনা করছে। চাউর করে দেওয়া হয়েছে বামেরা ২৩ জন। বাম বিরোধীরা ২৪ জন। কিন্তু তৃণমূলের ওই সমীকরণে যে কংগ্রস নেই সে ব্যাপারে তারা স্পষ্ট বার্তা দিতে চান। জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘দলের কাউন্সিলররা নিয়ম মেনে শপথ নেবেন। তার পর মেয়র এবং চেয়ারম্যান নির্বাচনের পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমাদের কাউন্সিলররা থাকবেন না।’’ এ দিন বিকেলেই কংগ্রেসের তরফে তাদের কাউন্সিলরের কাছে দলের হুইপের চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়।
শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা নান্টু পাল বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’’ বিজেপি’র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু এ দিন বলেন, ‘‘গত ৩৪ বছর পুরসভায় ক্ষমতায় থেকেও শিলিগুড়ির উন্নয়নে ব্যর্থ হয়েছে বামেরা। এর পর গত নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। তারা আরও ব্যর্থ হয়েছে। বাম এবং তৃণমূল দুই পক্ষের থেকেই আমরা সম দূরত্ব বজায় রাখছি। আমাদের দুই জন কাউন্সিলর শপথ গ্রহণ করবেন। তার পর তারা চলে আসবেন। মেয়র, চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নেবেন না।’’ দলের কাউন্সিলরদের তরফেও এ ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করা হয়েছে।
কংগ্রেস কাউন্সিলররাও এ দিন জানিয়ে দেন দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে তাঁরা সোমবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পরেই বেরিয়ে আসবেন। এ দিন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর সুজয় ঘটক ওয়ার্ডে নির্বাচনে জয়ের প্রেক্ষিতে অনুগামীদের নিয়ে পিকনিকের আয়োজন করেন। স্থানীয় অরুণোদয় সঙ্ঘের মাঠে আয়োজন করা হয়। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘দলের তরফে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা মেনেই আমরা চলব। শপথ গ্রহণের পরেই আমরা ফিরে আসব।’’
একই কথা জানিয়েছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর পিন্টু ঘোষ, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপ্না দত্ত-ও। সীমা দেবী বলেন, ‘‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি তৃণমূলের সঙ্গে বোর্ড চালাতে গিয়ে আমাদের অনেক লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে। তারা আমাদের নানা ভাবে হেয় করেছে। নির্বাচনের সময়ও তারা নানা ভাবে আমাদের কুৎসা করতে চেষ্টা করেছেন। মানুষ যে রায় দিয়েছে এখনও তারা মেনে নিতে চাইছেন না। আমরা মানুষের মতামতকে শ্রদ্ধা করি। মেয়র এবং চেয়ারম্যান নির্বাচনে তাই অংশ নেব না। এ ব্যাপারে দলীয় নির্দেশের পাশাপাশি বাসিন্দাদের মতামত নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy