Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মেলালেন গাঁধীই, কংগ্রেস দফতরে বৈঠকে বিমানেরা

গাঁধীজির জন্মের দেড়শো বছরে অবিভক্ত বাংলায় তাঁর কর্মকাণ্ডের উপরে বিধান ভবনের বাইরে একটি প্রদর্শনীর সোমবার সূচনা করেছেন সুপ্রিয় মুনশি।

বিধান ভবনে প্রদর্শনী দেখার ফাঁকে ঘরোয়া আলোচনায় সোমেন মিত্রের সঙ্গে বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্র। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

বিধান ভবনে প্রদর্শনী দেখার ফাঁকে ঘরোয়া আলোচনায় সোমেন মিত্রের সঙ্গে বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্র। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১০
Share: Save:

মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী হলেন উপলক্ষ। লক্ষ্য, রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির বিকল্প জোট গড়ে তোলা। গাঁধী স্মরণের অবসরে সেই লক্ষ্যেই বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির ঘরে মুখোমুখি হলেন কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের রাজ্য নেতৃত্ব। কোনও নেতার মৃত্যুতে এক দলের দফতরে অন্য দলের শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার রেওয়াজ থাকলেও কংগ্রেসের দফতরে বসে বাম নেতাদের এমন বৈঠক এই প্রথম। বাংলায় গত বিধানসভা ভোটে দু’পক্ষে আসন সমঝোতা করে লড়াই হলেও এমন বৈঠক বেনজির।

গাঁধীজির জন্মের দেড়শো বছরে অবিভক্ত বাংলায় তাঁর কর্মকাণ্ডের উপরে বিধান ভবনের বাইরে একটি প্রদর্শনীর সোমবার সূচনা করেছেন সুপ্রিয় মুনশি। সেই উপলক্ষেই বাম নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। আলিমুদ্দিনে এ দিনই ছিল বামফ্রন্টের বৈঠক। সেই বৈঠক সেরে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার ও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী ও মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায় ও হাফিজ আলম সৈরানিরা গাঁধী-প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। তার পরে তাঁদের বিধান ভবনের তিন তলায় নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে উত্তরীয় দিয়ে অভ্যর্থনা জানান সোমেনবাবু। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংবিধান রক্ষার প্রশ্নে তাঁরা দ্রুতই একসঙ্গে পথে নামবেন বলে ঠিক হয়েছে এ দিনের আলোচনায়। কংগ্রেসের তরফে ছিলেন অমিতাভ চক্রবর্তী,

শুভঙ্কর সরকারেরা। সন্ধ্যায় আবার বিধান ভবনে যান বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী।

বিমানবাবু মনে করিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা ‘গাঁধীবাদী’ নন। কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলন এবং সাম্প্রদায়িক অশান্তির বিরুদ্ধে গাঁধীর ভূমিকা মনে রেখে তাঁরা স্মরণ অনুষ্ঠানে যান। দেশ যখন ‘বিপন্ন’, সেই সময়ে কংগ্রেস ও বামেদের হাতে হাত ধরে অনেক ক্ষেত্রেই পথ চলা প্রয়োজন বলে জানান বাম শরিক নেতারাও। যাঁদের অনেকেই লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার বিরোধী ছিলেন। আরএসপি নেতা মনোজবাবু এ দিনের বৈঠককে ‘বাংলার রাজনীতিতে একটি জল-বিভাজিকা’ বলে মন্তব্য করেছেন। আর তাঁর আমন্ত্রণে বাম নেতারা এ ভাবে সাড়া দেওয়ায় খুশি সোমেনবাবু।

সূত্রের খবর, একটি মঞ্চ গড়ে যৌথ আন্দোলনের রাস্তায় নামার কথা উঠেছিল আলোচনায়। সূর্যবাবু বৈঠকে বলেছেন, কর্মীরা তৈরি আছেন। দ্রুত পথে নামা প্রয়োজন। আর বিমানবাবুর মতে, রাস্তায় আগে নেমে তার পরে মঞ্চ তৈরি করা যাবে। এই সৌহার্দ্য কি ভোটের দীর্ঘস্থায়ী সমীকরণের চেহারা নেবে? পরে বিমানবাবু বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতারা আমাদের চা খেতে ডেকেছিলেন। চা তো নীরবে খাওয়া হয় না! বাঙালি চা খেতে খেতে পাঁচটা কথা বলেই। তবে এর সঙ্গে নির্বাচন বা অ-নির্বাচনের প্রশ্ন নয়। পরিস্থিতি যা তৈরি হয়েছে, কংগ্রেস চাইলে নিশ্চয়ই যৌথ কর্মসূচি হতে পারে।’’ সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘এই আলোচনা ভবিষ্যতে ঐক্য ও একসঙ্গে চলার পথ সুগম করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Left Front
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE