Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সংখ্যালঘু মন পেতে বার্তা অধীর-সেলিমের

করিমপুরে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী গোলাম রাব্বির সমর্থনে বুধবার জনসভায় ছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম।

বুধবার করিমপুরে সিপিএম প্রার্থী গোলাম রাব্বির সমর্থনে জনসভায় অধীর চৌধুরী এবং মহম্মদ সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।

বুধবার করিমপুরে সিপিএম প্রার্থী গোলাম রাব্বির সমর্থনে জনসভায় অধীর চৌধুরী এবং মহম্মদ সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।

কল্লোল প্রামাণিক
করিমপুর শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৪
Share: Save:

সেই ১৯৭৭ সাল থেকে টানা ৩৯ বছর সিপিএমের দখলে ছিল নদিয়া জেলার করিমপুর। সাড়ে তিন বছর আগে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম বার করিমপুর বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল। এ বার উপনির্বাচনে হারানো জমি পুনরুদ্ধারে সংখ্যালঘু মন পেতেই নজর দিচ্ছে বাম ও কংগ্রেস। দু’দলের দুই শীর্ষ নেতাকে নিয়ে উপনির্বাচনের প্রথম যৌথ প্রচার-সভায় অন্তত সেই লক্ষ্যই স্পষ্ট হল।

করিমপুরে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী গোলাম রাব্বির সমর্থনে বুধবার জনসভায় ছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। প্রার্থী রাব্বির পাশাপাশিই ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী। জনসভা ছিল থানারপাড়া থানা সংলগ্ন যে হাটের কাছে, সেই এলাকা মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সভা থেকে অধীর-সেলিম যেমন এক দিকে বাংলায় কোনও ভাবেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) চালু করতে না দেওয়ার কথা বলেছেন, তেমনই তৃণমূল জমানায় সংখ্যালঘুদের প্রকৃত উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

রাজ্যে এনআরসি-বিরোধিতায় সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু অধীরবাবু এ দিন উদাহরণ দিয়েছেন, এ রাজ্যে কংগ্রেস জমানায় বিদ্যুৎমন্ত্রী ছিলেন বরকত গনি খান চৌধুরী, সেচমন্ত্রী আব্দুস সাত্তার, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন। সাচার কমিশনের রিপোর্টকে প্রচারের হাতিয়ার করে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূলের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কত জন সংখ্যালঘু মুখ আছেন, প্রশ্ন তোলেন তিনি। অধীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘মাথায় হিজাব পরে এবং এনআরসি-র কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের ভোট পাওয়ারই শুধু চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁদের প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি।’’

জনসভায় উপস্থিত জনগণ।—নিজস্ব চিত্র।

সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার রায় দেওয়ার পরে অন্যান্য দল অবস্থান জানালেও নীরব থেকেছে তৃণমূল। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার চেয়ে পথেও নেমেছে সিপিএম। দলের পলিটব্যুরো সদস্য সেলিম এ দিন বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার পরে মমতা সিপিএমকে মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে কথা বলতে বারণ করেছিলেন। আমাদের মুখ তো বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু বাবরি মসজিদ রায় নিয়ে উনি মুখে কুলুপ এঁটেছেন!’’ একই সুরে অধীরবাবুর মন্তব্য, ‘‘অযোধ্যা নিয়ে আদালতের রায় সবাইকে মানতে হবে এবং মেনেও নিয়েছেন। কিন্তু সব রাজনৈতিক দল তাদের অবস্থান জানিয়েছে। একমাত্র মমতা কিছু বলেননি। কারণ, বললেই সিবিআই চলে আসবে!’’

জেলায় জেলায় এনআরসি-র বিরুদ্ধে সমাবেশ এবং মিছিল করছে বামেরা। সেই সুর ধরে রেখে এ দিনও সেলিমের হুঁশিয়ারি, ‘‘বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ আর অমিত শাহ এনআরসি করে বাংলা থেকে দু’কোটি মানুষকে তাড়াবেন বলছেন। কিন্তু আমরা তা কোনও দিন হতে দেব না।’’ উপনির্বাচনে সরকার পরিবর্তন যে হবে না, সেই বাস্তব উল্লেখ করেই প্রয়োজনীয় বার্তা দেওয়ার জন্য মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন অধীরবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকার পরিচালনায় মানুষ খুশি নাকি বিরক্ত, তার একটা ছবি পাওয়া যাবে। হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সরকার গড়লেও তাদের আনন্দ পালিয়ে গিয়েছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE