Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কংগ্রেস নেতার পরিবারকে লাগাতার পুলিশি হেনস্থা, আত্মঘাতী নেতার স্ত্রী

স্বামীকে না পেয়ে স্ত্রীকে বার বার হেনস্থা পুলিশের। অপমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করলেন কংগ্রেস নেতা আজিজুল হকের স্ত্রী। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় উত্তাল মুর্শিদাবাদের কান্দি। অভিযুক্ত এএসআই বিজয় পালের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে কংগ্রেস। কান্দি পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটির আগে যে কাউন্সিলর অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনাতেই কংগ্রেস নেতা আজিজুল হকের নাম জড়িয়ে দিয়ে হেনস্থা করছিলেন বিজয় পাল। এমনটাই অভিযোগ মৃতা চৈতালি বেগমের পরিজনদের।

আত্মগাতী চৈতালি বেগম। —নিজস্ব চিত্র।

আত্মগাতী চৈতালি বেগম। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ১৪:২২
Share: Save:

স্বামীকে না পেয়ে স্ত্রীকে বার বার হেনস্থা পুলিশের। অপমানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করলেন কংগ্রেস নেতা আজিজুল হকের স্ত্রী। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় উত্তাল মুর্শিদাবাদের কান্দি। অভিযুক্ত এএসআই বিজয় পালের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে কংগ্রেস। কান্দি পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটির আগে যে কাউন্সিলর অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনাতেই কংগ্রেস নেতা আজিজুল হকের নাম জড়িয়ে দিয়ে হেনস্থা করছিলেন বিজয় পাল। এমনটাই অভিযোগ মৃতা চৈতালি বেগমের পরিজনদের।

কান্দি পুরসভার কংগ্রেসি বোর্ডের বিরুদ্ধে ২০১৫-র ডিসেম্বরে অনাস্থা আনা হয়েছিল। বেশ কয়েক জন কংগ্রেস কাউন্সিলরকে ভাঙিয়ে নিয়ে এই অনাস্থা আনে তৃণমূল। দুই বাম সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন আদায় করে কংগ্রেস বোর্ড বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির আগে তাঁদের মধ্যে দেবজ্যোতি রায় নামে এক কাউন্সিলরকে অপহরণ করা হয়। ফলে পুরসভায় ভোটাভুটিতে হার হয় কংগ্রেসের। কিন্তু, কাউন্সিলর অপহৃত থাকা অবস্থায় ভোটাভুটি হওয়ায় গোটা প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে তৃণমূল বোর্ড গঠন করতে পারেনি। এর পর থেকে কান্দির কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উপর পুলিশি নির্যাতন বেড়ে যায় বলে কংগ্রেসের অভিযোগ।

আরও পড়ুন:
ভোট মিটতেই পাণ্ডবেশ্বরের গ্রামে গ্রামে হামলার মুখে বামেরা

কংগ্রেস নেতা আজিজুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছিল। কাউন্সিলর দেবজ্যোতি রায়ের অপহরণের মামলাতেও পুলিশ আজিজুলকে অভিযুক্ত করে। কান্দির বোর্ডে কংগ্রেসকে সংখ্যালঘু করতে তৃণমূলই দেবজ্যোতিকে অপহরণ করিয়েছিল বলে কংগ্রেস, বাম-সহ প্রায় সব বিরোধী দলের অভিযোগ। কিন্তু পুলিশ ওই মামলায় কংগ্রেস নেতাকেই অভিযুক্ত করে তদন্ত শুরু করে। আজিজুল হকের বিরুদ্ধে ছিনতাই, জাতি দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা-সহ আরও নানা মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। সব মামলাতেই তিনি জামিন পেয়ে যান। শুধু একটি মামলায় জামিন পাওয়া বাকি ছিল। সেই মামলাতে আজিজুলকে গ্রেফতার করার জন্য কান্দি থানার এএসআই বিজয় পাল মাঝেমদ্যেই হানা দিতেন আজিজুলের বাড়িতে। আজিজুলকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী চৈতালিকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হত বলে অভিযোগ। বিজয় পাল সম্প্রতি চৈতালিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন এবং নানা কটূক্তি করেন বলে মৃতার পরিজনদের দাবি। দিনের পর দিন পুলিশি হেনস্থা সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে চৈতালি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে আজিজুল হকের পরিবার দাবি করেছে।

মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের অভিযোগ, কান্দি থানার এএসআই বিজয় পাল শাসক দলের হয়ে কাজ করেন। কান্দির বোর্ড দখল করতে না পেরে তৃণমূল বিজয় পালের মতো পুলিশ কর্মীদের কাজে লাগিয়ে প্রতিহিংস চরিতার্থ করার চেষ্টা করছিল বলেও বিরোধীদের দাবি। তার বলি হতে হল চৈতালি বেগমকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kandi Congress Leader Police harassment Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE