Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
সিঙ্গুরে সমস্যা

কংক্রিট ভাঙতে নাজেহাল হয়ে আর্জি নকশার

লোহা কেটে শেড ভাঙা হচ্ছে। আর মাটির নীচের কংক্রিট চুরমার করতে ফাটানো হচ্ছে এন্তার ডিনামাইট। কিন্তু তাতে সিঙ্গুরে কৃষকদের চাষের জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া ঠিক কতটা এগোচ্ছে, প্রশাসন ভাল বুঝে উঠতে পারছে না।

দেবজিৎ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১৫
Share: Save:

লোহা কেটে শেড ভাঙা হচ্ছে। আর মাটির নীচের কংক্রিট চুরমার করতে ফাটানো হচ্ছে এন্তার ডিনামাইট। কিন্তু তাতে সিঙ্গুরে কৃষকদের চাষের জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া ঠিক কতটা এগোচ্ছে, প্রশাসন ভাল বুঝে উঠতে পারছে না।

তাই অন্ধকারে হাতড়ে সময় নষ্ট না-করে অন্য পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। সিঙ্গুরে টাটার গাড়ি কারখানার ভিত থেকে শেড— গোটা নির্মাণের নকশা বানিয়েছিল যে বেসরকারি সংস্থা, নবান্ন এ বার তাদের দ্বারস্থ হয়েছে।

সূত্রের খবর, গত বুধবার সংস্থাটির প্রতিনিধিদের ডেকে নকশার খুঁটিনাটি সরকারকে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। নকশা থেকে মূলত বোঝা যাবে, মাটির নীচে কোথায় কত গভীরে কত কংক্রিট রয়েছে। সেই অনুযায়ী বিস্ফোরণের তীব্রতা বাড়ানো-কমানো হবে। সংস্থাটি নকশা দিতে রাজিও হয়েছে।

২১ অক্টোবরের মধ্যে সিঙ্গুরের জমি চাষযোগ্য করে ফেরত দেবে সরকার— মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করতে প্রশাসনের ঘুম ছুটেছে। বস্তুত গত পাঁচ-ছ’দিন ধরে নাগাড়ে ডিনামাইট ফাটিয়েও আশানুরূপ ফল মেলেনি। কেন?

এক কর্তার ব্যাখ্যা: মাটির উপরের শেড আর তলার কংক্রিট ভাঙতে দু’আড়াই হাজার লোক এক সঙ্গে কাজ করছে। তাই খুব বেশি জোরালো বিস্ফোরক ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এতেই সমস্যা। ‘‘কংক্রিটের উপরের অংশ ভাঙছে ঠিকই। তবে কংক্রিট-গাঁথনির শেষ অংশটুকু ভাঙছে কি না, সংশ্লিষ্ট এজেন্সির লোকজন তা ঠিক বুঝতে পারছেন না।’’— বলেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দিন চারেক আগে পূর্ত-সচিবকে সঙ্গে নিয়ে কারখানা চত্বর সরেজমিনে ঘুরে দেখেন স্বরাষ্ট্র-সচিব মলয় দে। পর দিন যান মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে তাঁরা হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি), কলকাতা পুরসভা, কেএমডিএ, পূর্ত ও পরিবহণ দফতরের সচিব-অফিসারদের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন। তখনই ন্যানো কারখানার নকশা প্রস্তুতকারীদের সাহায্য চায় নবান্ন। সংস্থার প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকেই ডেকে নেওয়া হয়। নকশা পেলে ঠিক কী সুবিধা হবে?

রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা: মাটির নীচে কোথাও সাত-আট ফুট, কোথাও বা আরও গভীরে কংক্রিটের নির্মাণ রয়েছে। উপর থেকে বোঝা যায় না। তাই নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণে সন্তোষজনক ফল মিলছে না। এমতাবস্থায় বিস্ফোরণে দক্ষ সংস্থার পরামর্শ, কংক্রিটের গভীরতামেপে ডিনামাইটের ক্ষমতা বাড়ানো-কমানো হোক। ‘‘কিন্তু সেটা করতে গেলে নির্মাণের নকশা দরকার, যা সরকারের ঘরে নেই। নকশা প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছে তা চাওয়া হয়েছে।’’— মন্তব্য কর্তাটির।

রাজ্যের শিক্ষমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য শুক্রবারও দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া সময়সীমার আগেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Concrete
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE