Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রোমোটার-রাজ নাকাল করছে, বোমা সাধনের

আগে দলীয় লাইনের বাইরে গিয়ে মুখ খুলে তৃণমূলের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছিলেন। এ বার বিধানসভায় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের বক্তব্য ঘিরে ফের চড়ে গেল জল্পনার পারদ! অসাধু ও প্রতারক প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তাঁর দফতরকে কার্যত হেনস্থা করা হচ্ছে বলে মঙ্গলবার বিধানসভায় স্বীকার করে নেন সাধনবাবু। ফ্ল্যাট, বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে প্রোমোটারদের হাতে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ঠেকাতে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, প্রশ্ন ছিল তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরীর। সাধনবাবু বলেন, “আমার হাত সীমাবদ্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে অনেকে। আমাদের বিচারক কাউকে জেলে পাঠাতে চাইলে তা-ও রুখে দিতে চাইছে কেউ কেউ। আদালতে গিয়ে দফতরের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৪৬
Share: Save:

আগে দলীয় লাইনের বাইরে গিয়ে মুখ খুলে তৃণমূলের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছিলেন। এ বার বিধানসভায় ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের বক্তব্য ঘিরে ফের চড়ে গেল জল্পনার পারদ!

অসাধু ও প্রতারক প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তাঁর দফতরকে কার্যত হেনস্থা করা হচ্ছে বলে মঙ্গলবার বিধানসভায় স্বীকার করে নেন সাধনবাবু। ফ্ল্যাট, বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে প্রোমোটারদের হাতে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ঠেকাতে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, প্রশ্ন ছিল তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরীর। সাধনবাবু বলেন, “আমার হাত সীমাবদ্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে অনেকে। আমাদের বিচারক কাউকে জেলে পাঠাতে চাইলে তা-ও রুখে দিতে চাইছে কেউ কেউ। আদালতে গিয়ে দফতরের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।”

প্রোমোটার-রাজের হাত লম্বা হতে হতে তাঁর দফতর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় মন্ত্রী কী করতে চাইছেন, তা-ও জানিয়ে দেন সাধনবাবু। বলেন, দফতরের অধিকার ‘অক্ষুণ্ণ’ রাখতে মাসখানেকের মধ্যে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। সাম্প্রতিক কালে তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই বিধানসভায় সাধনবাবুর এ দিনের জবাব ঘিরে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারের ভিতরে-বাইরে।

প্রোমোটারেরা নিম্ন মানের ইমারতি সামগ্রী ব্যবহার করছে, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের কাছে এমন প্রচুর অভিযোগ আসছে বলে সাধনবাবু জানান। তাঁর অভিযোগ, সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হলে নানা স্তর থেকে তাঁকে বাধা পেতে হচ্ছে। “নাম বলতে পারছি না। কিন্তু কোনও সংস্থা যদি আমাদের আটকানোর চেষ্টা করে, আদালতে গিয়ে আমাদের তিরস্কারের চেষ্টা করে, তা হলে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে রুলিং চাইব,” বলেন মন্ত্রী।

সাধনবাবু তাঁর দফতরের কাজে বাধার কথা তোলার পরেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, “সংবিধান আপনাকে নির্দিষ্ট ক্ষমতা দিয়েছে। আপনি তা প্রয়োগ করতে পারেন। অহেতুক নিজেকে দুর্বল দেখাবেন না।”

কারও নাম না-করলেও সাধনবাবু শাসক দলের সঙ্গে প্রোমোটার-রাজের যোগসাজশের দিকে ইঙ্গিত করেছেন বলেই বিধায়কদের একাংশের ধারণা। প্রোমোটারি এবং ইমারতি সামগ্রীর ব্যবসায় শাসক দলের নেতা-কর্মীদের আধিপত্য নিয়ে অভিযোগ উঠেছে বহু বার। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং দলীয় বৈঠকে একাধিক বার প্রোমোটার-রাজ এবং সিন্ডিকেট থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কর্মীদের। তাতেও যে পরিস্থিতি বদলায়নি, সাধনবাবুর বক্তব্যে তারই ইঙ্গিত রয়েছে বলে তৃণমূলের একাংশের অভিমত।

স্পিকারের হস্তক্ষেপের পরেও কিছু বলতে চাইছিলেন সাধনবাবু। সুযোগ পাননি। সভার বাইরে তাঁর ব্যাখ্যা, আদালতে যা ঘটছে, তিনি তা নিয়েই কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রায় দিলে তার বিরুদ্ধে প্রতারক হাইকোর্টে চলে যাচ্ছে। সেখানে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় নাকচ হয়ে যাচ্ছে। অথচ এই আদালতের ক্ষমতার পরিধি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দু’টি রুলিং আছে।” সম্প্রতি হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই প্রোমোটার হাইকোর্ট থেকে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রায় পেয়েছে বলে তিনি জানান।

সাধনবাবু বলেন, “এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানাক, ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় সাধারণ আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায় কি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE