Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Local Train

লোকাল-পিছু ৬০০! অন্যদের রুখবে কে

লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরুর আগে বিভিন্ন স্টেশনে যে-ভাবে বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০৫:২৭
Share: Save:

একেবারে যেন শরৎচন্দ্রের সেই ‘লাও তো বটে, আনে কে’-র অবস্থা! অতিমারির মধ্যে পরিষেবা শুরু হলে প্রতিটি লোকাল ট্রেনে ৬০০ যাত্রী নেওয়ার কথা বলছেন রেলকর্তারা। কিন্তু বললেই তো আর হল না। যাত্রী যেখানে অগণন, সেখানে আরোহীর সংখ্যা ৬০০-য় বেঁধে রাখবে কে? কী ভাবেই বা সেটা সম্ভব হবে?

উত্তর নেই রেলকর্তাদের কাছে। কারণ, তাঁদের অধিকাংশের কাছেই ব্যাপারটা এখনও স্পষ্ট নয়। রাজ্য সরকারের তরফে রেলকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শহরতলির যে-সব স্টেশনে যাত্রীর চাপ খুব বেশি, সেখানে জনস্রোত ঠেকানোর সহজগ্রাহ্য পন্থা খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ। সোমবারের বৈঠকের প্রেক্ষিতে রাজ্য এবং রেল দু’পক্ষই আপাতত সব যাত্রীকে সুযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সেই জন্য মেট্রোয় অনুসৃত ভিড় নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আপাতত প্রয়োগ না-করার কথাই ভাবা হয়েছে। সেটা জানিয়েও দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কাল, বৃহস্পতিবার রেল ও রাজ্যের ফের বৈঠকে বসার কথা। তার আগে আজ, বুধবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন।

লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরুর আগে বিভিন্ন স্টেশনে যে-ভাবে বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে সংশয় রয়েছে। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন স্টেশনে রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট ট্রেনে উঠতে চেয়ে সাধারণ যাত্রীদের যে-হুড়োহুড়ি চোখে পড়েছে, তাতে দূরত্ব-বিধি কতটা মানা সম্ভব হবে, সেটাও বড় প্রশ্ন। রেল সূত্রের খবর, আপাতত অল্প সংখ্যায় ট্রেন চালানো হলেও পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী ট্রেন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে মূলত যাত্রীদের সচেতনতার উপরেই নির্ভর করতে চাইছেন রেলকর্তারা। কিছু স্টেশনকে বাদ রেখে সেখানে গ্যালপিং ট্রেন চালানোর কথা ভাবা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্টেশনগুলিকে হকারমুক্ত রাখার বিষয়টি পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। বৈধ টিকিট ছাড়া যাত্রীদের যাতায়াত আটকাতে ব্যাপক হারে টিকিট পরীক্ষায় জোর দিতে পারে রেল। সফরের সময় মাস্ক ব্যবহার-সহ স্বাস্থ্যবিধি পালনের উপরে জোর দেওয়া হতে পারে। শুরুতে সকাল-সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে ট্রেন চালানোর কথা চলছে। ওই সব ট্রেনের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে ভিড় অনুযায়ী।

রাজ্য ও রেলের বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পরেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে সংশ্লিষ্ট শিবিরের আশা। তবে রেলকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, কলকাতা মেট্রোর প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুম্বইয়ে যে-ভাবে যাত্রীর সংখ্যা এক-চতুর্থাংশে নামিয়ে আনার কথা ভাবা হয়েছে, সেই ভাবে পশ্চিমবঙ্গেও যাত্রী-সংখ্যা সীমিত রাখার উপযুক্ত পরিকল্পনা থাকা উচিত। কারণ, ভিড় ঠেকাতে না-পারলে আইনশৃঙ্খলার সমস্যার মতোই বিপত্তি বাড়াতে পারে করোনার আগ্রাসী আক্রমণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE