পাচার হওয়া সাত কিশোরীকে মানসিক জোর জোগাতে ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন করেছিল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। তাতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বলছে, পাচার হওয়া মেয়েদের পরিচয় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু শিশু সুরক্ষা কমিশন ও একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ঘোষণা করে এই শোয়ের আয়োজন করেছিল। সেই ছবি অনেকেরই মোবাইলে ঘোরাফেরা করেছে। ওই মেয়েদের নাক পর্যন্ত পাতলা ওড়নায় ঢাকা থাকলেও চোখ ও মুখের বাকি অংশ অনাবৃত ছিল। তাতে ওই মেয়েদের মুখের অবয়বও হাল্কা বোঝা যাচ্ছে। তাই এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেই মনে করছেন আইনজীবী ও সমাজকর্মীদের অনেকে।
আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পাচার হওয়া মেয়েদের পরিচয় প্রকাশ করা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধী। পুনর্বাসন বা আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য পড়াশোনা শেখানো বা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করা উচিত।’’ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, কোনও পাচার হওয়া মেয়ে সম্মতি দিলেও তার পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের এক আধিকারিকের মতে, পাচার হওয়া মেয়েরা যৌন নিগ্রহেরও শিকার। ফলে তাঁদের পরিচয় ফাঁস করলে সামাজিক ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তে হয়। কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের বিপদেরও আশঙ্কা থাকে।
শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী জানান, বিভিন্ন আবাসিক হোম এ ধরনের অনুষ্ঠান করে। সকলেরই মুখ ঢাকা ছিল। অনুষ্ঠানে সকলকে অনুরোধ করা হয়, যাতে কেউ ছবি না তোলেন। ছবি তুললে ‘প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়্যাল অফেন্স’ (পকসো)-র বিরুদ্ধে যাবে। কিন্তু তাঁর নির্দেশ অনেকেই শোনেননি বলে অনন্যাদেবীই জানিয়েছেন।
হাইকোর্টের আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া তরুণী সাবালক হয়ে নিজে এ ধরনের অনুষ্ঠানে এগিয়ে আসলে তাঁকে আমি সাধুবাদ জানাই। পাচার হয়ে যৌন হেনস্থার শিকার হওয়াটা তাঁর লজ্জার কারণ হতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy