Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

গাঁধী-মূর্তির দিকে পিছন ফিরে সভা 

গাঁধী-মূর্তি থেকে মঞ্চের দূরত্ব বড়জোর ৬০ ফুট। আজ, শনিবার মেয়ো রোডে বিজেপির যুব মোর্চা আয়োজিত সভায় সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ সেই মূর্তির দিকে পিছন ফিরেই বক্তৃতা করবেন।

অমিত শাহ।

অমিত শাহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০২:২১
Share: Save:

গাঁধী-মূর্তি থেকে মঞ্চের দূরত্ব বড়জোর ৬০ ফুট। আজ, শনিবার মেয়ো রোডে বিজেপির যুব মোর্চা আয়োজিত সভায় সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ সেই মূর্তির দিকে পিছন ফিরেই বক্তৃতা করবেন। যা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে নিয়ে সঙ্ঘ পরিবারের যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, মঞ্চের অবস্থান কি তার সঙ্গেই সঙ্গতিপূর্ণ?

প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জবাব, ‘‘আমরা তো চেয়েছিলাম গাঁধী মূর্তিকে সামনে রেখেই সভা করতে! নিরাপত্তার কারণে পুলিশ তা করতে দেয়নি। গাঁধীকে আমরা শ্রদ্ধা করি। বাকিরা ব্যবসা।’’ বিজেপি সূত্রে খবর, মূল মঞ্চের আয়তন হচ্ছে লম্বায় ৪৮ ফুট এবং চওড়ায় ৩৬ ফুট। মঞ্চের ঠিক পিছনে থাকছে দু’টি তাঁবু। একটি শাহের বিশ্রামাগার এবং অন্যটি শৌচালয়। মঞ্চের ঠিক সামনে, বাঁদিকে তৈরি হচ্ছে আরেকটি ছোট মঞ্চ। সেখানে বসবেন দলীয় নেতারা।

তবে মঞ্চের অবস্থান নিয়ে আদৌ খুশি নন রাজ্য সভাপতি। তাঁর বক্তব্য, নিরাপত্তার কারণে যে জায়গায় মঞ্চ তৈরি হচ্ছে, তাতে লোক ধরবে না। বস্তুত, শুক্রবার নির্মীয়মাণ মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে জিপিএসে দেখা গেল, পার্ক স্ট্রিট মোড়ের দূরত্ব ৯০০ মিটার। মঞ্চের সামনে নিরাপত্তার জন্য আরও খানিকটা জায়গা ছাড়তে হয়। পুলিশের হিসেব, খুব বেশি হলে হাজার চল্লিশেক লোক ধরবে সামনের রাস্তায়। কিন্তু শুক্রবারও বিজেপির দাবি, সভায় অন্তত ৩ লক্ষ লোক হবে। ইতিমধ্যেই পাথুরিয়া ঘাটার দু’টি ধর্মশালায়, হাওড়ায় এবং শালকিয়ার আস্তানায় জেলা থেকে দলীয় কর্মীরা এসে গিয়েছেন। রাতে এবং সকালে জেলা থেকে আরও লোক আসবেন বলে দাবি। সর্বভারতীয় সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও এসেছেন। ফলে উদ্বৃত্ত মানুষের ভিড়ে যানজটের আগাম সতর্কতা দিয়ে রেখেছেন দিলীপবাবু। বিজেপির আরেক শীর্ষ নেতার দাবি, ‘‘আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডও ভরে যাবে। সকলে যাতে সভা দেখতে পান, সে জন্য বেশ কিছু জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাখা হচ্ছে হাজার খানেক স্বেচ্ছাসেবক।’’

মেদিনীপুর-কাণ্ডের পর মঞ্চ এবং ভিড় নিয়ে দৃশ্যতই উদ্বিগ্ন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। শুক্রবার সকালে দলের পরিদর্শক কৈলাস বিজয়বর্গীয় একবার ঘুরে যাওয়ার পর ফের চলে আসেন দুপুরে। চেয়ার নিয়ে মঞ্চের সামনেই স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে লাগাতার বৈঠক করতে থাকেন। সভাস্থলে গিয়েছিলেন দিলীপবাবুও। মঞ্চের দায়িত্বে থাকা এক সাধারণ সম্পাদক জানান, পুলিশের কাছ থেকে ড্রোনের অনুমতি না মেলায় স্বেচ্ছাসেবক আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, এর পরেও কোনও ‘অঘটন’ ঘটলে তা যে তাঁরা নিজেদের ঘাড়ে রাখবেন না, শুক্রবার তা কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছেন দিলীপবাবু। বস্তুত, এ দিন তিনি দু’টি চিঠি পাঠিয়েছেন। একটি, রাজ্যের মুখ্য সচিবকে এবং অন্যটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘‘বিজেপির সভার দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তৃণমূল ‘রাস্তা রোকো’ কর্মসূচি পালন করবে। এর ফলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে প্রশাসন এবং শাসক দল দায়ী থাকবে।’’ যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, ‘রাস্তা রোকো’র কোনও কর্মসূচি তাদের নেই। রাজনাথের চিঠিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে তিনি রাজ্য সরকারকে আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে ‘সতর্ক’ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gandhi Statue Amit Shah Stage BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE