উপস্থিতির হার যাই হোক, পরীক্ষায় বসতে দিতেই হবে। অন্যথায় ঘেরাও-আন্দোলন, অনশন। বারবার এই আন্দোলনের মুখে পড়ে পরীক্ষায় বসার জন্য বাধ্যতামূলক ৫৫ শতাংশ উপস্থিতির হারের নিয়মটিই তুলে দেওয়া উচিত কি না, তাই নিয়েই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বৃহস্পতিবার জানান, একাধিক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও ১৯৯৯ সালে তৈরি আইন এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাংশের মত হল, সিন্ডিকেট চাইলে সেই নিয়ম পরিবর্তন করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসির নিয়মে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় বসতে গেলে পড়ুয়ার ৭৫ শতাংশ উপস্থিতির হার বাধ্যতামূলক। ১৯৯৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, কলা, বিজ্ঞান এবং বাণিজ্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় বসতে ৫৫ থেকে ৬৫ শতাংশ উপস্থিতি থাকলেই হবে। তার চেয়ে কম উপস্থিতির পড়ুয়াদের ‘নন-কলেজিয়েট’ করে দেওয়া হবে। ১০০ টাকা জরিমানা দিয়ে তাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন। কিন্তু কোনও পড়ুয়ার উপস্থিতির হার ৫৫ শতাংশেরও কম থাকলে তিনি ‘ডিস-কলেজিয়েট’ হয়ে যান। তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয় না।
এর পর থেকে প্রায় প্রতি বছরই ৫৫ শতাংশের কম উপস্থিতি থাকা পড়ুয়াদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। পরীক্ষায় বসার দাবিতে আন্দোলনও করেছেন পড়ুয়ারা। উপাচার্য এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও হতে হয়েছে বারবার। কোনও কোনও বছর বাড়তি ক্লাস করিয়ে উপস্থিতির হার বাড়িয়ে ‘ডিস-কলেজিয়েট’ পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিতেও কার্যত বাধ্য হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
হাজিরা বিধি বিশ্ববিদ্যালয় উপস্থিতির হার*
* শতাংশে
শিক্ষামহলের প্রশ্ন, পাকাপাকি সমাধান পেতে কি এ বার উপস্থিতির হার সংক্রান্ত নিয়মই তুলে দিতে হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘৫৫ শতাংশ উপস্থিতির হার সংক্রান্ত নিয়ম তুলে দেওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। তবে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি।’’
রাজাগোপালবাবুর মত, ‘‘অনেকেরই ধারণা বিশ্ববিদ্যালয়ে না গেলেও তিনি ক্লাসের তথ্য পেয়ে যাবেন। নোটস বা প্রাইভেট টিউশন পেয়েই সন্তুষ্ট পড়ুয়ারা। এই প্রবণতা সব থেকে বেশি কলা বিভাগে।’’ যদিও উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্লাস করার প্রবণতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে এখনই বাধ্যতামূলক উপস্থিতির নিয়ম বদলে ফেলা যাচ্ছে না। তবে সত্যিই যদি তুলে দিতে হয়, তবে তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy