Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রবিবাবুর নাম শুনে খুশি কোচবিহার

টেলিভিশনের সামনে যেন বসেছিল গোটা কোচবিহারই। যে জেলায় দলের স্কোর নয়ে আট, সেখান থেকে ক’জন মন্ত্রী হবেন, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। কিন্তু সম্ভবত তার চেয়েও বেশি কৌতূহল ছিল, তৃণমূলের দীর্ঘ দিনের সেনাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মন্ত্রীত্ব পাবেন কি না, তা নিয়েই। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা এই মানুষটিই এই জেলায় দলের স্কোর আগের চেয়ে দ্বিগুণ করেছেন বলে মনে করেন তৃণমূল কর্মীরা।

জয়ের পরে কোচবিহারে খুশির উচ্ছ্বাস রবীন্দ্রনাথবাবুকে ঘিরে।—ফাইল চিত্র

জয়ের পরে কোচবিহারে খুশির উচ্ছ্বাস রবীন্দ্রনাথবাবুকে ঘিরে।—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০২:৪৬
Share: Save:

টেলিভিশনের সামনে যেন বসেছিল গোটা কোচবিহারই। যে জেলায় দলের স্কোর নয়ে আট, সেখান থেকে ক’জন মন্ত্রী হবেন, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। কিন্তু সম্ভবত তার চেয়েও বেশি কৌতূহল ছিল, তৃণমূলের দীর্ঘ দিনের সেনাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মন্ত্রীত্ব পাবেন কি না, তা নিয়েই। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা এই মানুষটিই এই জেলায় দলের স্কোর আগের চেয়ে দ্বিগুণ করেছেন বলে মনে করেন তৃণমূল কর্মীরা। রবিবাবু এক সময় কংগ্রেস করতেন। ১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দল পরিবর্তন করে তৃণমূলে যান। সেই সময় থেকে তিনি তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির দায়িত্বে। বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান এবং পরিষদীয় সচিব ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী হননি।

কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা ছিল, ভোটের দিন তাঁর চড়। ঘনিষ্ঠ এক অনুগামীকে রেগে গিয়ে চড় বসিয়ে দিয়েছিলেন রবিবাবু। সেই চড় তাঁর হতাশার বহিঃপ্রকাশ বলেই তখন ধরা হয়েছিল। কিন্তু ১৯ মে দেখা গেল, নাটাবাড়ি কেন্দ্রটি তিনি নিজের দখলেই রাখতে পেরেছেন। তারপরেই ২৭ মে নিয়ে প্রত্যাশা বাড়তে থাকে। অবশেষে পুরষ্কার পেলেন তিনি। তাই টেলিভিশনে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে রবীন্দ্রনাথবাবুর নাম উচ্চারণ হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। হইচই শুরু হয়ে যায় রবিবাবুর বাড়িতেও। তাঁর স্ত্রী, মেয়ে, আত্মীয়রাও আনন্দে মেতে ওঠেন। রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য কলকাতাতেই। তিনি অনেকটাই শান্তও ছিলেন। বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যে দায়িত্ব দেবেন, তা আমি একশো শতাংশ পালন করব।”

রবীন্দ্রনাথবাবুর পাশাপাশি কোচবিহার থেকে মন্ত্রী হয়েছেন বিনয়কৃষ্ণ বর্মনও। বিনয়বাবু গতবারেও বন দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। বিনয়বাবু বলেন, “দিদি যা দায়িত্ব দেন তা পালনে কোনও খামতি রাখিনি। এ বারেও রাখব না।” রবীন্দ্রনাথবাবু মন্ত্রী হওয়াতেও খুশি বিনয়বাবু।

কিন্তু দিনহাটা থেকে জয়ী উদয়ন গুহের মন্ত্রিসভায় থাকা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে প্রচার চলছিল। তাঁর অনুগামীরা প্রায় ধরেই নিয়েছিলেন উদয়নবাবু মন্ত্রী হচ্ছেন। তাই এ দিন তালিকায় উদয়নবাবুর নাম না থাকায় তাঁর অনুগামীরা ভেঙে পড়েছেন। উদয়নবাবু নিজে অবশ্য বলেন, “এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা।”

রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামীদের মধ্যে অবশ্য খুশির বান ডেকেছে। কোচবিহারের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিন মেয়ে, এক ছেলে। দুই মেয়ে বিবাহিতা। ছেলে ও ছেলের স্ত্রী আমেরিকায় কর্মরত। তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা পার্থপ্রতিম রায়, মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী শুচিস্মিতা দেবশর্মারা বলেন, “খুব ভাল লাগছে। রবীন্দ্রনাথবাবু মন্ত্রী হবেন, সে আশা বহুদিন থেকেই ছিল। তা পূরণ হওয়ায় আমরা খুশি।” রবীন্দ্রনাথবাবুর পরিবারের সদস্যরাও তা নিয়ে আনন্দে মাতেন।

রবীন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী রেবা দেবী বলেন, “আমি ঠাকুর ঘরে সন্ধ্যারতির পুজো দিচ্ছিলাম। সেই সময় বড় মেয়ে টিভি দেখে খবর দেয়। খুব ভাল লাগছে।” তাঁর বড় মেয়ে পাপিয়া ঘোষ বলেন, “ছোটবেলা থেকেই বাবাকে মানুষের জন্য কাজ করতে দেখেছি। সেই কাজের নিরিখে বাবার মন্ত্রী হওয়ার সংবাদ স্বপ্নপূরণের মতো।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindranath Ghosh Cooch behar TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE