প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের প্রথম করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু একই সঙ্গে ভয় আর অস্বস্তির স্রোত নামিয়ে এনেছে ফেয়ারলি প্লেসে পূর্ব রেলের সদর দফতরে।
দমদমের ওই প্রৌঢ় পূর্ব রেলের সদর দফতরে অ্যাকাউন্টস এবং এফিসিয়েন্সি সেলের কর্মী ছিলেন। করোনা-আক্রান্ত দেশে ভ্রমণের ইতিহাস না-থাকা সত্ত্বেও যে-ভাবে তাঁকে সংক্রমণের গ্রাসে পড়তে হয়েছে, তা শঙ্কা বয়ে এনেছে পুরো দফতরে। মঙ্গলবার তাঁর এক সহকর্মী তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে নীলরতন সরকার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে রেলকর্মীদের। ওই কর্মীর লালারসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও মেলেনি। তবে অসুস্থ প্রৌঢ় সহকর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নেন তিনিই।
দমদমের প্রৌঢ় রেলকর্মীর মৃত্যু এবং পরে তাঁর সহকর্মীর অসুস্থতার খবরে ফেয়ারলিতে পূর্ব রেলের বিশাল ভবন কার্যত সুনসান। এ দিন বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ আধিকারিক ও জেনারেল ম্যানেজার ছাড়া কেউই কাজে আসেননি। লকডাউন চলায় বেশির ভাগ কর্মী বাড়িতে আছেন বলে জানান দফতরের এক আধিকারিক। একমাত্র জরুরি প্রয়োজনে কর্মীদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে।
দমদমের রেলকর্মীর মারণ ভাইরাসে মৃত্যুর খবর তাঁর সহকর্মীদের কাছে কার্যত বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। পূর্ব রেল সূত্রের খবর, করোনা সংক্রমণ নিয়ে চার পাশে গভীর আশঙ্কা তৈরি হওয়ার পরে, ১৯ মার্চ সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফেরা তিন মহিলা কর্মীকে চিহ্নিত করে কোয়রান্টিনে পাঠানোর তোড়জোড় চলছিল। দমদমের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় রেলকর্মী যে ইতিমধ্যেই সংক্রমিত, তা কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।
তার দু’দিন পরে, গত শনিবার সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দমদমের ওই প্রৌঢ়ের করোনা-সংক্রমণের খবর নিশ্চিত হয়। রেলের চিকিৎসক সরেজমিনে বিষয়টি জানতে হাসপাতালে যান। সেখানে সংক্রমণের কারণ জেনে রেলের কর্তারা ওই দফতরের ২১ জন আধিকারিক-কর্মীর তালিকা তৈরি করেন। তাঁদের সকলকে ইতিমধ্যেই ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে বলে পূর্ব রেলের খবর। ওই প্রৌঢ় কর্মী যে-বিভাগে কাজ করতেন, ইতিমধ্যেই সেই বিভাগকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। নজরদারিতে থাকা ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আর কারা এসেছিলেন, তা ভাবাচ্ছে রেল-কর্তৃপক্ষকে। আশঙ্কায় রয়েছেন ওই ২১ কর্মীর পরিবারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy