Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

ক্যানসার আক্রান্ত কোয়রান্টিনে

৪৫ হাজার টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে ১৬৩৮ কিলোমিটার পথ উজিয়ে ফিরলেন মকিম।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কিংশুক গুপ্ত
বিনপুর শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৫৮
Share: Save:

ক্যানসারের সংক্রমণ ছড়িয়েছে ফুসফুসে। ছ’টি কেমো দেওয়া হয়েছে। একেবারে শেষ অবস্থা। পরিজনেদের বক্তব্য, বিনপুরের বছর চৌত্রিশের শেখ মকিম আলিকে তাই লকডাউনের মধ্যেও বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ভেলোরের সিএমসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

৪৫ হাজার টাকায় অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে ১৬৩৮ কিলোমিটার পথ উজিয়ে ফিরলেন মকিম। কিন্তু বিনপুরের নয়াগ্রামের বাড়িতে নয়, শনিবার রাতে দিনমজুর মকিম ও তাঁর ভাই শেখ শামিমের ঠাঁই হল ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে। সেখানে তাঁকে খেতে দেওয়া হল লুচি, মশলা দেওয়া ঘুগনি, চপ। ভিন্ রাজ্য থেকে আসায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিভৃতবাসে যেতে আপত্তি নেই। কিন্তু লালগড়ের কিসান বাজারে লেবার রিলিফ ক্যাম্পের নিভৃতবাসের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে মকিমের পরিবার। শামিমের অভিযোগ, মকিমকে স্নানের জন্য গরম জলও দেওয়া হচ্ছে না।

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রোগীর ধকল হয়েছে। কিন্তু ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতেই হবে। তার আগে কিছু করা সম্ভব নয়।’’ নিভৃতবাসের পরিবেশ নিয়ে মকিমদের পরিবারের অভিযোগ প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা শুধু বলেছেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের যা করণীয়, তা আমরা করছি।’’ এর বাইরে আর কিছুই বলতে রাজি নন তিনি।

বছর খানেক আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন মকিম। শ্বাসকষ্ট ছিল। কাশির সঙ্গে রক্তপাত শুরু হয়। স্থানীয় চিকিৎসক দেখিয়েও সুরাহা না হওয়ায় গত বছর ভুবনেশ্বরের এক বেসরকারি হাসপাতালে দেখানো হয় মকিমকে। সেখান থেকে ভেলোর সিএমসিতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেখানেই ধরা পড়ে ফুসফুসের ক্যানসার। শুরু হয় চিকিৎসা। স্ত্রী, তিন পুত্র, বাবা, মা, দাদা ও দুই ভাইকে নিয়ে বড় পরিবার। সামান্য কিছু জমি ছিল। চিকিৎসার জন্য তা বিক্রি করতে হয়। লকডাউনের আগেই সিএমসিতে কেমোথেরাপি চলছিল মকিমের। বাড়িতে পরিজনেদের মাঝে তাঁকে রাখার পরামর্শও দেন চিকিৎসক।

বাড়ি ফিরছিলেন। তবে বাড়ির ১৩ কিলোমিটার আগে পুলিশ গাড়ি আটকায়। অ্যাম্বুল্যান্সটিকে জীবাণুমুক্ত করে ভেলোরে ফেরত পাঠানো হয়। দুই ভাই যান নিভৃতবাসে। মকিমের পরিজনেরা চান, এই পরিস্থিতিতে পৃথক ভাবে তাঁকে উপযুক্ত পরিবেশে কোথাও রাখা হোক। যাতে পরিজনেরা দূর থেকে তাঁকে দেখতে পারেন। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘খাবার নিয়ে সমস্যা হলে অবশ্যই সমাধান করে দেওয়া হবে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE