Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

অভিন্ন ভর্তি-বিধি চান চিকিৎসকেরা

করোনা রোগী প্রত্যাখ্যান বন্ধে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের জন্য মঙ্গলবার একটি নির্দেশিকা দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ০৩:২৮
Share: Save:

নির্দেশিকা স্বাগত। তবে করোনা রোগীর হয়রানি বন্ধে সেই ব্যবস্থাপত্রেও ছিদ্র থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক-প্রশাসকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে পজ়িটিভ রোগীদের ভর্তি প্রক্রিয়াকে এক সুতোয় গাঁথা দরকার। এ কাজে সমন্বয়ের অভাবই করোনা রোগীদের হয়রানির অন্যতম কারণ।

করোনা রোগী প্রত্যাখ্যান বন্ধে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের জন্য মঙ্গলবার একটি নির্দেশিকা দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। বুধবার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা বৃদ্ধির তৎপরতা শুরু হয়েছে। সরকারি ক্ষেত্রেও ত্রুটি মেরামতির চেষ্টা চলছে। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, নমুনা পরীক্ষা এবং তার ভিত্তিতে রোগী ভর্তির প্রশ্নে অভিন্ন বিধি থাকা জরুরি। তা না-থাকায় বিভ্রান্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগীদের হয়রানি।

নমুনা পরীক্ষা এবং ভর্তি নিয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বক্তব্যে সামঞ্জস্যের অভাব ধরা পড়েছে। আরজি করের নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতির সঙ্গে এনআরএসের মিল নেই। এসএসকেএম এবং ন্যাশনালের ব্যবস্থা পৃথক। আরজি করের অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যাল জানান, জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের ফিভার ক্লিনিকে পাঠানো হচ্ছে। যাঁদের নমুনা পরীক্ষা প্রয়োজন, ফিভার ক্লিনিক তাঁদের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ফিজিশিয়ানের (এসএমওপি) কাছে পাঠায়। রোগীকে কোন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হবে, নমুনা নেওয়া হবে কি না—সিদ্ধান্ত নেবেন এসএমওপি। এনআরএসের উপাধ্যক্ষ করবী বড়াল জানান, ফিভার ক্লিনিকে করোনা সন্দেহভাজনকে মেডিসিন ওয়ার্ডের মাধ্যমে ভর্তি করিয়ে নমুনা নেওয়া হচ্ছে। পজ়িটিভ হলে স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়ে পাঠানো হচ্ছে কোভিড হাসপাতালে।

এসএসকেএমের উপাধ্যক্ষ রঘুনাথ মিশ্র জানান, নমুনা সংগ্রহের জন্য ভর্তির দরকার নেই। ফিভার ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা মনে করলে বহির্বিভাগে নমুনা নিয়ে পাঠাচ্ছেন হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে। ন্যাশনালের এক প্রশাসক-চিকিৎসক বলেন, ‘‘দু’ভাবে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। ভর্তি না-করলেও যাঁদের নমুনা পরীক্ষা প্রয়োজন বলে ফিভার ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা মনে করছেন, তাঁদের প্রথমে ট্রু-ন্যাটে পরীক্ষা করা হচ্ছে। রিপোর্ট পজ়িটিভ হলে বাড়ি থেকে ডেকে ফের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে আর-টি পিসিআরের জন্য। রোগী প্রথমেই ওয়ার্ডে ভর্তি হলে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমেই পরীক্ষা হচ্ছে।’’ রিপোর্ট পজ়িটিভ হলে বাঙুর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ বা বেলেঘাটা আইডিতে আক্রান্তকে পাঠাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। বাঙুরের সুপার শিশির নস্কর জানান, তাঁরা জ্বরের উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ারও পরীক্ষা করাচ্ছেন।

আমরি গ্রুপের সিইও রূপক বড়ুয়া জানান, চিকিৎসক লিখে দিলেই তাঁরা নমুনা পরীক্ষা করে দেবেন। কিন্তু শয্যা না-থাকলে করোনা পজ়িিটভ রোগীর পরিজনকেই অন্য হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে শয্যার ব্যবস্থা করতে হবে। বেলভিউ, পিয়ারলেস, আরএন টেগোর উপসর্গহীন ব্যক্তিদের ভর্তি করিয়ে নমুনা পরীক্ষা করায়। মেডিকা, সিএমআরআই পরীক্ষা করায় ভর্তি না-করেই। বিভিন্ন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানান, এমন পরিস্থিতিতে রোগীকে অন্যত্র ভর্তি করার প্রশ্নে স্বাস্থ্য দফতরের সক্রিয় হওয়া উচিত। পিয়ারলেসের সিইও সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘‘নির্দেশিকায় আপত্তি নেই। কিন্তু একটিও শয্যা খালি না-থাকলে কী করণীয়, তা-ও স্পষ্ট করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE