Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

স্বস্তি জোগাচ্ছে সুস্থতার হার, রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার কমে ৬.৭৩ শতাংশ

গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩৪৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:২২
Share: Save:

দৈনিক আক্রান্তের চেয়ে সুস্থতার হার আস্তে আস্তে বেড়েই চলেছে রাজ্যে। মঙ্গলবারও তা অব্যাহত থাকল। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩ হাজার ৩৪৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন, দৈনিক সুস্থতার নিরিখে এখনও পর্যন্ত যা সর্বাধিক। একই সঙ্গে রাজ্যে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যাও অনেকটা কমে গিয়েছে।

পর পর বেশ কয়েক দিন ২ হাজারের কোটায় ঘোরাঘুরির পর, শনি ও রবিবার ফের নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ হাজারের বেশি হয়ে যায়। এ দিন তা ফের ২ হাজারের ঘরে নেমে গিয়েছে। এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৪৩ জন। তাতে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ৭২১।

গত ২৩ অগস্ট থেকে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবেই কমছিল। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ হাজার ৮২২। গতকালের তুলনায় এ দিন সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫৮ কম। ৭ অগস্টের পর গত ২৩ দিনে এই প্রথম সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা এতটা নামল। সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ধারাবাহিক ভাবে কমে আসাটা আশাজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)

আরও পড়ুন: ‘গত ৭০ বছরে কারও এক ইঞ্চি জমিও দখল করিনি’, দাবি চিনের​

তবে গত গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৫ জন। সোমবার এই সংখ্যাটা ছিল ৫২। রবিবার করোনায় রাজ্যে ৫০ জন মারা গিয়েছিলেন। তার চেয়ে এ দিন মৃত্যুসংখ্যা বেড়ে ৫৫ হয়েছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৩ হাজার ২৮৩ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

তবে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তার চেয়ে রাজ্যে সুস্থতার হার অনেকটাই বেশি। এটাই স্বস্তি জোগাচ্ছে প্রশাসনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩৪৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। দৈনিক সুস্থতার নিরিখে এখনও পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৬১৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তার ফলে রাজ্যে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৩.০৪ শতাংশ।

প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৪৩ হাজার ৭৩৮ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, দৈনিক টেস্টের নিরিখে এখনও পর্যন্ত যা সর্বাধিক। তার পরেও এ দিন সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ৬.৭৩ শতাংশ। গত ৪ জুলাই সংক্রমণের হার ছিল ৬.৭৪ শতাংশ। তার প্রায় দু’মাস পর সংক্রমণের হার এত নীচে নামল।

জেলাগুলির মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। সেখানে এ দিন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৩ জন। এ দিন সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ প্রাণও হারিয়েছেন সেখানে, ১২ জন। পাশাপাশি সুস্থও হয়ে উঠেছেন ৭৬৩ জন করোনা রোগী।

তালিকায় এর পরেই রয়েছে কলকাতা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৫১ জন, প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন এবং সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৫৯ জন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৬৭ জন মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৮৯ জন রোগী। হাওড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১১৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের এবং সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২৪ জন। হুগলিতে এ দিন ১০৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩৬ জন রোগী।

এ ছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ প্রাণ হারিয়েছেন বাঁকুড়ায়। পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ ও আলিপুরদুয়ারে ২ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন। ১ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন, বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর ও কোচবিহারে।

আরও পড়ুন: প্যাংগংয়ে মুখোমুখি ট্যাঙ্ক বাহিনী, দিল্লিতে বৈঠকে রাজনাথ​

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE