Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নকল সংসদে সুখবিলাস চিদম্বরম, অশোক ইয়েচুরি

জাতীয় সঙ্গীতের পর স্পিকার চেয়ারে বসে সভা শুরুর ঘোষণা করতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর খোঁজে উত্তাল হয়ে উঠল লোকসভা। তবে দিল্লিতে নয়, শিলিগুড়িতে।নোট বাতিল নিয়ে আলোচনার শুরুতেই বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খার্গে প্রধানমন্ত্রী সভায় নেই কেন, জানতে চেয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

নকল সংসদে সীতারাম ইয়েচুরির ভূমিকায় বক্তব্য রাখছেন অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নকল সংসদে সীতারাম ইয়েচুরির ভূমিকায় বক্তব্য রাখছেন অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৪০
Share: Save:

জাতীয় সঙ্গীতের পর স্পিকার চেয়ারে বসে সভা শুরুর ঘোষণা করতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর খোঁজে উত্তাল হয়ে উঠল লোকসভা। তবে দিল্লিতে নয়, শিলিগুড়িতে।

নোট বাতিল নিয়ে আলোচনার শুরুতেই বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খার্গে প্রধানমন্ত্রী সভায় নেই কেন, জানতে চেয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতেই বিরোধী সাংসদেরা চেয়ার ছেড়ে উঠে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমার বিরোধীদের বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে গেলেন। বিজেপি সাংসদেরাও বিরোধীদের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দিতে থাকলেন নানা মন্তব্য। দু’দফায় বেল বাজিয়ে, মার্শালদের নামিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা থেকে সিপিএম, কংগ্রেস সাংসদের বক্তব্যের মাঝেই হট্টগোল শুরু হতেই স্পিকার সভা মুলতুবি করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে এমন ছবিই দেখা গেল শিলিগুড়ির জংশনে। নোট বাতিলের প্রতিবাদে কংগ্রেসের ‘নকল সংসদ’ দেখতে বাসিন্দাদের ভিড়ও ছিল। সেই সংসদে আলোচনায় যোগ দিলেন সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, কংগ্রেসের পি চিদম্বরম থেকে বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ, অরুণ জেটলিরাও। মাইকে দিনভর যতবার নামগুলি ভেসে গিয়েছে, উৎসাহী লোকজন ততই ভিড় করেছেন এলাকায়। ডিউটিতে থাকা পুলিশ কর্মীরাও হাসতে হাসতে উঁকিঝুঁকি দেন। নকল সাংসদেরা একে অপরের সঙ্গে বাক্যবাণে জড়িয়ে পড়লেও হাসতে ভোলেননি।

তিন দফায় সভা মুলতবির পর বিকালে প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কংগ্রেসের কর্মসূচিতে দলের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের নেতা, বিধায়কদের সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে অন্য সিপিএম নেতারাও। স্পিকার হন প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘কেন্দ্র অগণতান্ত্রিকভাবে সংসদকে এড়িয়ে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কালো টাকা উদ্ধারের কথা বলে দেশের মানুষকে দুর্ভোগে ফেলা হয়েছে।’’ শঙ্করবাবু এ দিন লোকসভার বিরোধী দলনেতার ভূমিকায় ছিলেন। উদ্যোক্তাদের অন্যতন আইএনটিইউসি-র উত্তরবঙ্গের নেতা তথা সংসদের সেক্রেটারি জেনারেল অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দেশকে বাঁচানোর আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে প্রস্তাবটি পাঠানো হচ্ছে। আমাদের সভা, মিছিল চলবে।’’

সীতারাম ইয়েচুরির ভূমিকায় ছিলেন মেয়র অশোকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘দেশের সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলা আর বড়লোকদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়াটাই বিজেপির কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংসদকে এড়িয়ে সব কাজ হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।’’ পি চিদম্বরম হিসেবে বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা, সাংসদ হিসাবে সিপিএমের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত বা কংগ্রেসের বিধায়ক নুরুল হুদারা সরকারের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিও তোলেন। সকাল থেকেই নকল লোকসভায় সরব থাকেন প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সুবীন ভৌমিক, কুন্তল গোস্বামীরাও।

বিজেপির মন্ত্রী হিসাবে শিক্ষক সন্দীপন ভট্টাচার্য, আইনজীবী অরুণ মিশ্র, তাপস ভৌমিক, অলোক ধারা’রা দিনভর হাসিমুখে বিরোধী সাংসদের সঙ্গে নোট বাতিলের সুফল তুলে ধরে লড়াই চালিয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

demonetisation CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE