সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম।—ফাইল চিত্র।
জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার, এমনই ধারণা বহু মানুষের। অনেক রাজনৈতিক দলও এই মত পোষণ করছে। কেউ কেউ পদ্ধতিগত প্রশ্ন তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়ার ঝুঁকি নিয়েও সিপিএম কেন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় ময়দানে নেমেছে? তার জন্য আরএসএস-বিজেপি যে ভাবে বামেদের গায়ে ‘দেশদ্রোহী’র তকমা লাগাচ্ছে, তার মোকাবিলাই বা কী ভাবে হবে? দলেরই কর্মী-সমর্থকদের এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পাল্টা প্রচারের তথ্য সাজিয়ে সক্রিয় হল সিপিএম।
কলকাতা জেলা সিপিএমের আয়োজনে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে মঙ্গলবার কাশ্মীর-প্রশ্নে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করার পাশাপাশিই প্রশ্নের জবাব দিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। অন্যদের সুরে সুর না মিলিয়ে বিরোধিতা কেন এবং ‘দেশ-বিরোধী’ অবস্থান নেওয়ার অভিযোগের মোকাবিলা সংক্রান্ত প্রশ্নই সেখানে ছিল মূল। সেলিম জবাব দিয়েছেন, গণতন্ত্র মানেই সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদ নয়। কঠিন সময়ে সত্য বলার লোক চিরকালই অল্প থাকে। দেশের বর্তমান সরকার কোনও প্রশ্ন, কোনও ভিন্ন স্বর চায় না। এমতাবস্থায় কঠিন হলেও প্রশ্ন তোলা, বিরোধিতার সুর বাঁধার কাজ বামেদেরই করতে হবে। সেলিমের কথায়, ‘‘উলঙ্গ রাজার গায়ে যে কাপড় নেই, সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক তো সে কথা বলে না। সত্যের দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা স্বল্পসংখ্যক মানুষই করে।’’
কাশ্মীর সিদ্ধান্তের পরে সামাজিক মাধ্যমে সঙ্ঘ-বিজেপি তাদের প্রচার তুঙ্গে তুলে নিয়ে গিয়েছে। যার অধিকাংশই ‘বিকৃত তথ্য ও ব্যাখ্যা’ বলে অভিযোগ বিরোধীদের। ইতিহাসের তথ্য ও পরিপ্রেক্ষিত কাজে লাগিয়ে কী ভাবে তার পাল্টা বক্তব্য তুলে ধরতে হবে, সেই পরামর্শ সিপিএম কর্মীদের দেওয়া হয়েছে এ দিনের আসর থেকে। দলের অবস্থানের কারণ ও প্রেক্ষিত ব্যাখ্যা করে সেলিম বুঝিয়েছেন, তাঁরা কোনও ভাবেই দেশ-বিরোধী কোনও কথা বলছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা দেশের পক্ষে। আর বিজেপি-আরএসএস দ্বেষের পক্ষে। আমরা দ্বেষ-বিরোধী!’’ কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপরে ‘অত্যাচার’ নিয়ে কেউ কোনও কথা বলেনি, এই প্রচারেরও জবাব দিয়েছেন সিপিএমের পলিটব্যুরো নেতা।
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার উপরেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এ দিন। আরও বেশ কিছু প্রশ্ন রেখে দেওয়া হয়েছে, যার উত্তর দেওয়া হবে এর পরে। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার মতে, ‘‘এটা ছিল মূলত দলের সাধারণ সভা। সেই সভাকে সরাসরি সম্প্রচার করে যে ভাবে অনেককে জড়িয়ে নেওয়া হল, সেটাও খুব তাৎপর্যপূর্ণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy