Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্ট্রাইক কমিটি গড়ে কর্মীদের ১২ ঘণ্টার ‘ডিউটি’ দিল সিপিএম

কর্মীদের কেবল একটা মিছিল করেই দায় সারলে চলবে না, দু’দফায় ১২ ঘণ্টা করে ধর্মঘটের দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে জানিয়ে জারি হয়েছে কড়া নির্দেশিকাও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

নোট বাতিল, পঞ্চায়েত ভোটের নামে ‘প্রহসন’ বা পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সাম্প্রতিক কালের কোনও ধর্মঘটই তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। তবু লোকসভা ভোটের আগে টানা ৪৮ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটে সংগঠনকে রাস্তায় রাখতে মরিয়া হচ্ছে রাজ্য সিপিএম। সেই লক্ষ্যে অভিনব কায়দায় এ বার গড়া হয়েছে ‘স্ট্রাইক কমিটি’। দলের কর্মীদের কেবল একটা মিছিল করেই দায় সারলে চলবে না, দু’দফায় ১২ ঘণ্টা করে ধর্মঘটের দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে জানিয়ে জারি হয়েছে কড়া নির্দেশিকাও।

বস্তুত, দলের কাজে কে কতটা সক্রিয়, তা যাচাই করেই এখন সদস্যপদ নবীকরণের নীতি নিয়েছে সিপিএম। আগামী ৮-৯ জানুয়ারির ধর্মঘটকে সেই মূল্যায়নের সঙ্গেই জু়ড়ে দিচ্ছে আলিমুদ্দিন। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতি ও সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জানুয়ারিতে ওই ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে নানা কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন। বাংলায় বামফ্রন্ট সেই ধর্মঘটকেই সমর্থন করছে। তবে সিপিএম নেতৃত্ব কড়া নির্দেশিকা জারি করে কর্মীদের ধর্মঘটে সক্রিয় রাখতে চাইলেও দলের অন্দরে প্রশ্ন, এমনিতেই এই ধরনের কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের বড় অংশের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন থাকে না। তার উপরে প্রশাসনিক সক্রিয়তার মোকাবিলা করে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট করার মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা কি আদৌ আছে সিপিএমের?

সিপিএম নেতারা অবশ্য যুক্তি দিচ্ছেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বুথ স্তরে লড়াই জারি রাখতে হলে জানুয়ারির সাধারণ ধর্মঘট এবং ফেব্রুয়ারির ব্রিগে়ড সমাবেশকে ঘিরে সংগঠনকে তৈরি করতে হবে। সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহুকে আহ্বায়ক করে গড়া হয়েছে ‘স্ট্রাইক কমিটি’। জেলা, ব্লক এবং পুরসভা স্তরেও কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলে। ধর্মঘটের দু’দিন কোথায় কোন কর্মী কী ভাবে কোন দায়িত্ব পালন করবেন, সেই গোটা প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে ‘স্ট্রাইক কমিটি’। বলেই দেওয়া হয়েছে, ধর্মঘটের আগে একটা মিছিল করে দলীয় কার্যালয়ে বসে থাকা চলবে না!

দলের রাজ্য কমিটির নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ধর্মঘটের দু’দিনে ট্রেন বা উড়ান ধরা-সহ নানা কাজে যে অসুবিধা হবে, তার জন্য আগাম দুঃখপ্রকাশ করে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে কেন এই পথে যেতে হচ্ছে। কল-কারখানায় ধর্মঘটের নোটিস দিয়েই থাকে শ্রমিক সংগঠন। এ বারের নির্দেশিকা বলছে, দোকানে দোকানে ঘুরেও ধর্মঘটে সহায়তা চেয়ে প্রচারপত্র দিতে হবে। আর ধর্মঘটের সময় ১২ ঘণ্টা করে দু’দফার পরিশ্রম করতে হবে কর্মীদের।

রাজ্যে ধর্মঘটের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে দিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলছেন, ‘‘তৃণমূল কোন দিকে আছে, বুঝে নিতে হবে। এই ধর্মঘট নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই চাইলে এই প্রতিবাদে বাধা দেবেন না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strike General Strike CPM Strike Committee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE