Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
CPM

বৃহত্তর জোটে জায়গা ছাড়তে তৈরি সিপিএম

আনুষ্ঠানিক জোট না হলেও ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বামেদের আসন সমঝোতা হয়েছিল। আলিমুদ্দিনের ময়না তদন্তের তথ্য বলছে, সে বার কংগ্রেসের প্রতীকে ৯২টি আসনে প্রার্থী ছিল।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৪৪
Share: Save:

বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় ‘বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে’ নিজেদের ভাগ থেকে আরও বেশি আসন ছাড়তে প্রস্তুত সিপিএম। জোট-সঙ্গী কংগ্রেসের জন্য কম-বেশি ১০০ আসন ধরে বিধানসভা কেন্দ্র বণ্টনের ঘরোয়া হিসেব তৈরি করে ফেলেছে তারা। তবে কংগ্রেসের মনোভাব না জানলে আসন-রফার অঙ্কে এগোনো সম্ভব নয়। তাই আসন-রফার আলোচনা শুরুর জন্য বিধান ভবনের অপেক্ষায় রয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

আনুষ্ঠানিক জোট না হলেও ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বামেদের আসন সমঝোতা হয়েছিল। আলিমুদ্দিনের ময়না তদন্তের তথ্য বলছে, সে বার কংগ্রেসের প্রতীকে ৯২টি আসনে প্রার্থী ছিল। সিপিএমের প্রার্থী ছিল ১৪৮টি আসনে। বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক ২৫টি, আরএসপি ১৯ এবং সিপিআই ১১টি আসনে লড়েছিল। প্রায় ১৫-১৬টি আসন এমন ছিল, যেখানে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’য়ের নামে কংগ্রেস ও বাম শরিক, উভয়েরই প্রার্থী ছিল। সে সব হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, মোট ২৯৪টি আসনে বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন ৩০৯ জন। এ বার তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক জোটের তরফে এক আসনে এক জন প্রার্থী রাখাই প্রথম লক্ষ্য ধরে এগোচ্ছে সিপিএম।

গত কয়েক বছরে আন্দোলনের ক্ষেত্রে বামফ্রন্টের সঙ্গে অন্য সহযোগী মিলে ১৬ দলের জোট গড়ে উঠেছে। সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন, পিডিএস, আরজেডি, এনসিপি-র মতো দলগুলিকে আসন দিতে হবে, এই ভাবনাই রয়েছে আলিমুদ্দিনের। তার জন্য গত বারের ১৪৮-এর চেয়ে কম আসনে লড়তে হলেও সিপিএমের আপত্তি নেই। পক্ষান্তরে, কংগ্রেস ও জোটের জন্য বাম শরিকদেরও ‘নমনীয়’ হতে বলছে তারা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘গত বার ছিল তৃণমূলের সঙ্গে বাম ও কংগ্রেসের প্রায় সরাসরি লড়াই। এ বার বিজেপিকে ঠেকানোর গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য রয়েছে। তাই বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে যেখানে যার যতটুকু শক্তি রয়েছে, তাদের এক ছাতার তলায় সব রকম চেষ্টা হবে।’’

আরও পড়ুন: ‘গ্ল্যাক্সো বেবি’র পাল্টা ‘পকেটমার’, ব্যক্তি লড়াইয়ে ফের কুণাল-শোভন

আরও পড়ুন: অভিষেকেই টার্গেট অভিষেকের কেন্দ্র, ডায়মন্ড হারবারেই প্রথম সভা শোভনের

কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেই গত বার ৭টি আসনে অম্বিকেশ মহাপাত্র, প্রতিমা দত্তদের মতো নির্দল প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল। এ বারও গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি বা সংগঠনের জন্য জায়গা রাখতে চায় সিপিএম। ফুরফুরার আব্বাস সিদ্দিকিরা গ্রহণযোগ্য শর্তে সমঝোতায় এলে তাদের জন্যও জায়গা রাখা হবে। তবে সব কিছুই নির্ভর করবে কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কত আসনের দাবি নিয়ে রফা করবে, তার উপরে। জটিলতা কাটানোর কাজ শুরু করার জন্যই এখন কংগ্রেসের বক্তব্য দ্রুত জানতে চাইছেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরা।

জানুয়ারির মধ্যেই জোটের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য প্রদেশ কংগ্রেসকে বার্তা দিয়েছে এআইসিসি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিহারের ভোটের পরে এআইসিসি-র যা মনোভাব, খুব বেশি আসনের জন্য জোরাজুরির তারা পক্ষপাতী নয়। বরং, তারা কংগ্রেসের পক্ষে ‘ইতিবাচক’ আসনে নজর দিতে চায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর উপস্থিতিতেই যাতে আসন-রফার আলোচনা শুরু করা যায়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন এআইসিসি নির্ধারিত কমিটির দুই সদস্য আব্দুল মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্য। বারবার বৈঠকে গিয়ে ‘নিষ্ফলা’ আলোচনা চান না তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE