Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভোটে খরা, বামের বই বিপণিতে তবু বন্যা

রাজ্য জুড়ে বামেদের বই বিপণির সংখ্যাও এ বার বেড়েছে। গোটা রাজ্যে সিপিএমের বিপণি ছিল প্রায় ১১০০। তার মধ্যে কলকাতা পুরসভা এলাকার মধ্যে বিপণি ১০৯টি।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১৮
Share: Save:

পার্ক সার্কাস ময়দানে পুজো দেখতে গিয়েছিলেন বাম জমানার এক মন্ত্রীর স্ত্রী। মণ্ডপ চত্বরের বিপণি তাঁর কাছে তিনটি বই বিক্রি করেছে। তার মধ্যে আছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) সংক্রান্ত পুস্তিকাও। যা নিয়ে মাঠে-ময়দানে বক্তৃতা করছেন তাঁর স্বামী।

রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেই এ বার পুজোয় একই চিত্র। ঠাকুর দেখতে গিয়ে মার্ক্সীয় ও প্রগতিশীল সাহিত্যের স্টল থেকে বই কিনে ফিরেছেন বহু মানুষ। পাঠকের সাড়া দেখে কলকাতায় যাদবপুর-সহ কিছু জায়গায় বইয়ের বিপণি আজ, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। স্বভাবতই সম্পূর্ণ পরিসংখ্যান এখনও প্রকাশনা সংস্থার হাতে আসেনি। তবে প্রাথমিক হিসেব বলছে, পুজোর কয়েক দিনে বামেদের বিপণি থেকে রাজ্যে বই বিক্রি হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকার কাছাকাছি। সিপিএম নেতারা বলছেন, রাজ্যে দীর্ঘ ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার সময়েও কখনও বামেদের স্টলে বইয়ের এমন চাহিদা ছিল বলে তাঁদের মনে পড়ে না। রসিকতা করে কেউ কেউ বলছেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় যত ভোট পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি টাকার বই পুজোয় বিক্রি হয়েছে!’’

রাজ্য জুড়ে বামেদের বই বিপণির সংখ্যাও এ বার বেড়েছে। গোটা রাজ্যে সিপিএমের বিপণি ছিল প্রায় ১১০০। তার মধ্যে কলকাতা পুরসভা এলাকার মধ্যে বিপণি ১০৯টি। ভবানীপুরের ২৩ পল্লিতে পুলিশি অনুমতি না মিললেও স্টল খোলা হয়েছে। অন্যান্য বারের মতো স্টল ভাঙচুরের অভিযোগ এ বার ওঠেনি। সিপিএমের মতো সিপিআই, আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকও তাদের বই বিপণিকে কাজে লাগিয়েছে ভোটার তথ্য যাচাইয়ে মানুষকে সহযোগিতার জন্য। বেশ কিছু বড় বিপণি হয়েছে এসইউসি-রও। আর বিক্রির হিসেব নিতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, নেতাজিনগরের স্টলে এক দিনে এক লক্ষ টাকার বেশি বই বিকিয়েছে। যাদবপুর, নারকেলবাগান, রানিকুঠি হোক বা মানিকতলা— সর্বত্রই বিক্রির অঙ্ক লক্ষ ছাড়িয়েছে।

কলকাতা এবং জেলায় সিপিএমের বিপণিতে এ বার চাহিদার শীর্ষে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (ঘটনাচক্রে, পুজোর মধ্যে তাঁর শরীর ফের একটু খারাপ হয়েছে) সাম্প্রতিকতম বই ‘স্বর্গের নিচে মহাবিশৃঙ্খলা’। প্রকাশনা সংস্থা এনবিএ-র অন্যতম অধিকর্তা অনিরুদ্ধ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘পুজোর মধ্যেই বুদ্ধবাবুর বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা আর বই দিতে পারিনি। আশা করছি, লক্ষ্মীপুজোর মধ্যেই তৃতীয় সংস্করণ এসে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Durga Puja Book
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE