প্রতীকী ছবি।
দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘট মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। রাস্তায় ধর্মঘট সমর্থকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। প্রশাসনের এই সাজ সাজ রবের মধ্যেই সিপিএম এ বার পাল্টা বলে রাখল, ‘আঘাত হলে প্রত্যাঘাত হবে’!
জোর করে তাঁরা ধর্মঘট করতে যাবেন না বলে জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। আলিমুদ্দিনে রবিবার তিনি বলেছেন, ‘‘ধর্মঘট না করার অধিকারও যে কোনও ব্যক্তির আছে। কিন্তু যাঁরা ধর্মঘট করতে চান, তাঁদের উপরে জোর করার অধিকার কারও নেই। আমরা কাউকে জোর করব না। কিন্তু আঘাত হলে প্রত্যাঘাত হবে। দায়িত্ব সরকারের।’’
অন্যান্য বারের মতো শুধু ধর্মঘটের প্রচার সেরেই বাম কর্মী-সমর্থকেরা বসে যাবেন না বলেও এ দিন ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন সূর্যবাবু। তাঁর বক্তব্য, গত ৫০ বছরে যত ধর্মঘট হয়েছে, তার চেয়ে এ বারের দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘট আলাদা। বাম কর্মী-সমর্থক এবং ‘স্ট্রাইক কমিটি’র সদস্যদের মঙ্গল ও বুধবার, দু’দিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় থাকতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা এবং পরীক্ষা দিতে যাওয়া ছেলেমেয়েরা যাতে বাধা না পায়, সে দিকে নজর রাখা ধর্মঘটীদের ‘দায়িত্ব’— সে কথাও বলেছেন সূর্যবাবু। ধর্মঘটের পক্ষে নন যাঁরা, রাস্তায় ‘হয়রানি’ এড়াতে তাঁদেরও না বেরোনোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
সরকারের তরফে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মানুষকে অভয় দিয়ে বলেছেন, স্কুল-কলেজ-অফিস খোলা থাকবে। গাড়ি-ঘোড়াও চলবে। প্রশাসন সতর্ক থাকবে। তাঁর কথায়, ‘‘এক দিকে একটা দল সাম্প্রদায়িক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা তৈরি করতে চাইছে। অন্য দিকে আর একটা দল ৩৪ বছর সরকারি ক্ষমতায় ধর্মঘট করার পরে আবার সেই পথে রাজ্যকে নিয়ে যেতে চাইছে। কোনওটাই মেনে নেওয়া হবে না।’’ তবে ধর্মঘটের বিরোধিতায় তৃণমূল কর্মীদের রাস্তায় থাকার কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে পার্থবাবু জানান।
ধর্মঘটকারী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব গিয়েছিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে দেখা করতে। তাঁদের দাবি, নবীন জানিয়েছেন, ধর্মঘটের দাবিগুলি তিনি সমর্থন করেন। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সূর্যবাবুর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘট ঠেকাতে একমাত্র বাংলায় সরকারের সাজ সাজ রব! ধর্মঘটের দাবি নিয়ে কোনও নীতিগত বক্তব্য তৃণমূলের নেই! দেখা যাচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে তৃণমূলের সরকার খুবই উদ্বিগ্ন!’’ পার্থবাবু আবার পাল্টা বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, গোটা দেশ তা জানে। ধর্মঘটই শুধু প্রতিবাদের ভাষা নয়!’’
সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু, রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়েরা দাবি করেছেন, অন্যান্য বার যারা থাকে না, সেই বিদ্যুৎকর্মী ইউনিয়ন ও জঞ্জাল সাফাই কর্মীরাও এ বার ধর্মঘটে সামিল। ধর্মঘটের সমর্থনে বারুইপুর থেকে এ দিন গ়ড়িয়ার কামালগাজি পর্যন্ত মিছিলে ছিলেন সূর্যবাবু। শ্যামল চক্রবর্তীদের নিয়ে আর একটি মিছিল যাদবপুর থেকে কামালগাজিতে মেশে। মিছিলে ভিড় ছিল ভালই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy