Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

শিশুদের সার্জারির ইমার্জেন্সি ঘিরে সঙ্কট

লোকাভাব ছিলই, ২৪ ঘণ্টার ইমার্জেন্সি অস্ত্রোপচার চালাতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছিলেন চিকিৎসকেরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২২
Share: Save:

লোকাভাব ছিলই, ২৪ ঘণ্টার ইমার্জেন্সি অস্ত্রোপচার চালাতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছিলেন চিকিৎসকেরা। এরই মধ্যে গত শুক্রবার নির্দেশ জারি করে এসএসকেএম হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের তিন জন রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও)-এর মধ্যে দু’জনকে কলকাতারই অন্য দুই হাসপাতালে বদলি করে স্বাস্থ্য দফতর।

ফলে ইমার্জেন্সি সামলানোর জন্য এখন রয়েছেন এক জন করে আরএমও এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসার। এই লোকবল নিয়ে ২৪ ঘণ্টার ইমার্জেন্সি অস্ত্রোপচার যে সম্ভব নয় তা গত শনিবারই স্বাস্থ্য ভবনে জানান এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ।

গোটা রাজ্যে এই মুহূর্তে মাত্র দু’টি হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক সার্জারির ২৪ ঘণ্টার ইমার্জেন্সি চলে— নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ

হাসপাতাল এবং এসএসকেএম। এসএসকেএম-এর ওই বিভাগের প্রধান রুচিরেন্দু সরকারের কথায়, ‘‘সরকারি কাঠামোয় যে ভাবে কাজ চালাতে বলবে আমরা করতে বাধ্য। কিন্তু সত্যিই জানি না এই লোকবলে কী করে সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টার ইমার্জেন্সি চালানো যাবে। এত দিন ছ’জনের জায়গায় চার জন কাজ চালাতেন। এখন হল দু’জন। রাতের দিকে ইমার্জেন্সিতে প্রতি আধঘণ্টা অন্তর একটি শিশু আসে। এই চাপ কী ভাবে দু’জন সামলাবেন?’’

বিভাগেরই এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ভবনকে জানিয়েছি, মৌখিক ভাবে হয়তো জানাতে পারব না যে, ইমার্জেন্সিতে আসা শিশুদের পরিষেবা দিতে পারব না, কিন্তু এটাও চাইব না যে ভর্তি করে নিয়ে তাদের বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখব। তাই নিজেদের মতো করে ‘রেস্ট্রিক্টেড অ্যাডমিশন’ করেছি।’’

রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, ‘‘পেডিয়াট্রিক সার্জারির ইমার্জেন্সি নিয়ে সব জায়গায় সমস্যা। এসএসকেএম থেকে প্রোমোশন পেয়ে দুই আরএমও বদলি হওয়ায় ওখানে সমস্যা বেড়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিকল্প চিকিৎসক পাঠানোর চেষ্টা করছি। মুশকিল হল, রাজ্যে পেডিয়াট্রিক সার্জনের সংখ্যাটাই হাতে গোনা।’’

রাজ্যে শিশু চিকিৎসার একমাত্র রেফারাল হাসপাতাল বি সি রায়-এও চিকিৎসকের আকালে পেডিয়াট্রিক সার্জারির ইমার্জেন্সি ২৪ ঘণ্টা চালানো যাচ্ছে না। এসএসকেএমের এই পরিস্থিতিতে কাঁটা হয়ে রয়েছেন এনআরএসের চিকিৎসকেরাও। কারণ, তাঁরা জানেন, এর পরে পুরো চাপটা আছড়ে পড়বে তাঁদের উপর, যা সোমবার থেকে শুরুও হয়ে গিয়েছে। সেখানকার চিকিৎসক প্রফুল্লকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘লোক এখানেও কম। পোস্ট ডক্টরাল ট্রেনিদের ছ’টি আসনে পাওয়া গিয়েছে এক জনকে। এ বার তো আমাদের বুড়ো বয়সে ইমার্জেন্সি সামলাতে নামতে হবে।’’

স্বাস্থ্য ভবনও বুঝতে পারছে, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি পাওয়া যাচ্ছে না বলে ইমার্জেন্সি চালাতে আরও সমস্যা হচ্ছে। ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে এসএসকেএমে এই বিভাগে কোনও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি আসেননি। ২০১৭ তে এক জন প্রথম কাউন্সেলিংয়ে এলেও দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ে নিজের রাজ্যে সুযোগ পেয়ে চলে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Surgery SSKM Doctor Transfer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE